
ফাইল ছবি
দক্ষিণ চীন সাগরে প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে একটি সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে চীন। যেখানে আছে পারমাণবিক বোমারু বিমান উৎক্ষেপণের সক্ষমতা। নতুন স্যাটেলাইট চিত্রের ভিত্তিতে এ নিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট।
মিসচিফ রিফ নামে চীনের এই কৃত্রিম দ্বীপের স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ করেছে এশিয়া মেরিটাইম ট্রান্সপারেন্সি ইনিশিয়েটিভ (এএমটিআই)। ইনডিপেনডেন্ট বলছে, প্রকাশিত ছবিতে একটি সুসংগঠিত নগরের মতো অবকাঠামো, বিস্তৃত রানওয়ে, ক্ষেপণাস্ত্র রাখার স্থান, বিশাল আকারের উড়োজাহাজ হ্যাঙ্গারসহ উন্নত সামরিক সুবিধা দেখা গেছে।
এএমটিআই এর পরিচালক গ্রেগরি পোলিং অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজকে বলেছেন, এই ঘাঁটিগুলোর মধ্যে আছে বন্দরের সুবিধা, বিশাল রানওয়ে, ৭২টিরও বেশি যুদ্ধবিমান হ্যাঙ্গার, ভূমি থেকে আকাশে এবং জাহাজ ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও রাডার। এটি দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিকীকরণ ঘিরে আন্তর্জাতিক উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এএমটিআই-এর তথ্য অনুযায়ী, চীন বর্তমানে প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জে ২০টি এবং স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জে ৭টি অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে চারটি সম্পূর্ণ নৌ ও বিমানঘাঁটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এ ছাড়া, প্রবাল প্রাচীর স্কারবোরো শোয়াল-এ চীনা কোস্ট গার্ডের স্থায়ী উপস্থিতি থাকলেও এখনো কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরেই সার্বভৌমত্ব দাবি করে। এর মধ্যে ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামের দাবিকৃত অঞ্চলও আছে। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত চীনের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে রায় দেন। কিন্তু বেইজিং সে রায় প্রত্যাখ্যান করে।
চীন দাবি করে, এই সামরিক সম্প্রসারণ প্রতিরক্ষামূলক। যদিও এশিয়ার অন্যান্য দেশ এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছে। এএমটিআই পরিচালক গ্রেগরি পোলিং বলেন, ‘এই ঘাঁটিগুলো মানব ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত এবং ব্যাপক ড্রেজিং ও ভূমি ভরাট প্রকল্প। এমন পরিস্থিতি দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পথের জন্য হুমকি।
স্যাটেলাইটের ছবি অনুযায়ী, গত মে মাসে বিতর্কিত প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জে চীন সবচেয়ে উন্নতমানের দুটি বোমারু বিমান অবতরণ করে। ছবিগুলোতে দূরপাল্লার এইচ-৬ বোমারু বিমান দেখা যায় উডি আইল্যান্ডে। এই দ্বীপটি প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অংশ।
ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে আজ শুক্রবার। তবে এতে স্যাটেলাইট চিত্রের বর্ণনার বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি।