ছবি: সংগৃহীত
চরের আর্থসামাজিক উন্নয়ন কৌশলে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকে যথাযথ অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার (০৭ ডিসেম্বর ২০২৫) ঢাকায় বাংলামটরে ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্স (এনসিএ)-এর আয়োজনে “রেজিলিয়েন্স টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ ইন চর এরিয়াস এলঙ দ্য যমুনা রিভার বেসিন” শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বিশেষজ্ঞরা এই আহ্বান জানান।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা- উন্নয়ন সমন্বয়ের কার্যালয়ের খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স হলে আয়োজিত এই সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি-এর সেক্রেটারি জেনারেল ড. কবির এম. আশরাফ আলম (এনডিসি)।
উন্নয়ন সমন্বয়ের ইমেরিটাস ফেলো এবং বিআইজিডি-এর ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খোন্দকার সাখাওয়াত আলীর সঞ্চালনায় এই সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএস-এর গবেষণা পরিচালক এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের নির্বাহী সভাপতি ড. এস. এম. জুলফিকার আলী।
সংলাপে বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যমুনা অববাহিকার চরবাসী বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা চরাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য জাতীয় নীতি ও কৌশলে- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়গুলোকে যথাযথ অগ্রাধিকার না দিলে- ওই অঞ্চলগুলোতে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
এনসিএ- এর সদস্য সচিব জাহিদ রহমান বলেন, চরের মানুষের জীবন ও জীবিকার টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকারি এবং অ-সরকারি উদ্যোগের কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য। সে জন্য সকল অংশীজনের মধ্যে নিয়মিত কার্যকর মতবিনিময় অব্যাহত রাখা দরকার।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং সুইস রেডক্রসের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন ‘জয়েন্ট অ্যাকশন ফর মিটিগেইটিং ক্লাইমেট আনসারটেইনিটিজ অ্যান্ড ন্যাচারাল অ্যাডভারসিটিজ (যমুনা)’ প্রকল্পের সহায়তায় ন্যাশনাল চর অ্যালায়েন্স (এনসিএ)- যে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তার অংশ হিসেবে এই জাতীয় সংলাপ আয়োজিত হয়।
যমুনা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. জসিম উদ্দীন কবির প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, চরাঞ্চলের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যে বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে থাকেন- তা জাতীয় নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে তুলে ধরতে সংকল অংশীজনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এনসিএ-এর পক্ষ থেকে সংলাপের প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী। চরের টেকসই ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে কার্যকর ধারাবাহিক বরাদ্দ দেয়ার আহ্বানা জানান তিনি।

উন্মুক্ত আলোচনায় সুইস রেড ক্রসের ডেপুটি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ- সঞ্জীব বিশ্বাস সঞ্জয় চরবাসীর দুর্যোগ মোকাবিলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার সক্ষমতা বাড়াতে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশারি করা এবং স্থানীয় পর্যায়ের অংশীজনদের যথাযথ সহায়তা দেয়ার ওপর জোর দেন।
নদী-ভাঙ্গন পূর্বাভাস দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যথেষ্ট কারিগরি সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে দাবি করে ফাউন্ডেশন ফর ডিজাস্টার ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব গওহর নাঈম এই সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে চরাঞ্চলে আগামী দিনের অবকাঠামো বিষয়ক পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কবির এম. আশরাফ আলম চরাঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন বিষেয়ে দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য সকল অংশীজনকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান। আলোচনায় আরও অংশ নেন- ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, প্র্যাকটিকাল অ্যাকশন, রিভারাইন পিপল ট্রাস্ট, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ, ইসলামিক রিলিফ, মানব মুক্তি সংস্থা, সিসিডিবি, আরডিআরএস, উন্নয়ন সংঘ, এসডিএস এবং ইউএনডিপি-এর বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিরা।




