ফাইল ছবি
তাৎপর্যপূর্ণ এক সফরে ঢাকা আসছেন বৃটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়নমন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান। তার সফরটি হবে দু’দিনের। সফরটির কয়েক ঘণ্টা আগেও এ নিয়ে বাংলাদেশ বা বৃটেন- কোনো পক্ষের আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা নেই। সরকারি এবং কূটনৈতিক সূত্র বলছে, দুনিয়ার দেশে দেশে বৃটেন ঐতিহ্যগতভাবে অর্থনৈতিক সহায়তা দেয়। সেটি কাটছাঁট করার যে নীতি নিয়েছে কিয়ার স্টারমার সরকার এই সময়ে বৃটিশ উন্নয়নমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে।
তাছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ঘোলাটে। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটছে না। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নাজুক হলে প্রভাব পড়বে আঞ্চলিক তথা ভূ-রাজনীতিতে। কারণ বাংলাদেশকে ঘিরে ভূ-রাজনীতিতে নতুন মেরূকরণ ঘটছে। বিশেষ করে বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশিদের সম্পৃক্তকরণের প্রস্তাব এবং মিয়ানমারের রাখাইনে এখনো অবশিষ্ট থাকা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি বৈশ্বিক মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার গুঞ্জন রয়েছে। এই সময়ে বৃটেনের উন্নয়নমন্ত্রীর ঢাকা সফর নিশ্চিতভাবে কূটনৈতিক মহলের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকবে।
সূত্রগুলো এটা নিশ্চিত করেছে যে, প্রস্তাবিত সূচি মতে বুধবার দিবাগত রাতে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই বাংলাদেশে পৌঁছাবেন ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যান। সফরের প্রথম দিনটি কাটাবেন কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। সেখানে দায়িত্বরত আইএনজিও প্রতিনিধি, ক্যাম্প ম্যানেজমেন্টে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তা এবং অন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক হবে তার। সন্ধ্যায় ফিরবেন ঢাকা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি যাবেন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি। পরদিন শুক্রবার সরকারি ছুটি।
ওই দিনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং বিডা চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র বলছে, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েই বৈঠকগুলোতে মতবিনিময় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, বৃটিশ লেবার পার্টির এমপি জেনি চ্যাপম্যান বর্তমানে বৃটিশ সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও আফ্রিকা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত। তার আগে তিনি টিসাইড ইউনিভার্সিটির প্রথম নারী আচার্য হিসেবে কাজ করেছেন।
২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচন থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডার্লিংটনের এমপি ছিলেন মিজ জেনি। ২০২০ সালে তাকে লাইফ পিয়ার (হাউস অফ লর্ডসের সদস্য) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় এবং তিনি ব্যারোনেস অব ডার্লিংটন উপাধি গ্রহণ করেন। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় তিনি শ্যাডো মিনিস্টার ফর জাস্টিস, শ্যাডো মিনিস্টার ফর এক্সিটিং দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং শ্যাডো মিনিস্টার ফর দ্য ক্যাবিনেট অফিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জুলাই ’২৪ এ লেবার পার্টি সরকার গঠনের পর তিনি প্রথমে ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান বিষয়ক সংসদীয় আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে নিযুক্ত হন এবং পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী পদে উন্নীত হন। সেপ্টেম্বর ’২৫ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও আফ্রিকা দেখভাল করছেন।




