
ছবি: সংগৃহীত
১২৭ বছর পর গৌতম বুদ্ধের সময়ের ‘পিপ্রাহওয়া রত্ন’ ফিরে এল ভারতে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই রত্নগুলো হংকংয়ে ছিল। সম্প্রতি ভারত সরকার এই অমূল্য রত্নগুলো দেশে ফিরিয়ে এনেছে। এই প্রসঙ্গে এক্স হ্যান্ডলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘এটি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক গর্বের ও আনন্দের মুহূর্ত। ১২৭ বছর পর বুদ্ধের গহনা আমাদের ঘরে ফিরছে।” মূল্যবান এই সম্পদগুলো মে মাসে হংকংয়ে নিলামে উঠার কথা ছিল। ভারত এগুলো নিলাম না করে তাদের কাছে তা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল। নিলাম বন্ধ না হলে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল ভারত। ধর্মীয় অনুভূতি ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের প্রশ্ন তুলে আন্তর্জাতিক সংস্থা সোথেবি'স - এর ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছিল ভারত সরকার ও বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারা। এর ফলেই হংকংয়ে নির্ধারিত নিলাম বাতিল করে নিলামঘরটি।
১৮৯৮ সালে বৃটিশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে উত্তরপ্রদেশের পিপ্রাহওয়া এলাকার এক স্তূপ খনন করে এই রত্নগুলো পেয়েছিলেন। পিপ্রাহওয়াই প্রাচীন কপিলাবস্তু অর্থাৎ, বুদ্ধের জন্মস্থান বলে মনে করা হয়। সেখান থেকে ওই রত্নের পাশাপাশি একটি দেহাবশেষের খোঁজও মিলেছিল। যা গৌতম বুদ্ধের বলে মনে করেন একাংশের ঐতিহাসিকরা। এ ছাড়াও, সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছিল বেলেপাথরের একটি কফিন, সোনার অলঙ্কার এবং একাধিক মূল্যবাণ রত্ন। তখন ঔপনিবেশিক শাসন, ভারত থেকে রত্নগুলো পাড়ি দিয়েছিল বিলেতে। তার পরে বিভিন্ন হাত বদল হয়ে এই রত্নগুলো পৌঁছেছিল হংকংয়ে।
বৌদ্ধ ইতিহাসবিদ ও গবেষকরা এই আবিষ্কারকে আধুনিক যুগের অন্যতম বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। শুধু সরকারের হস্তক্ষেপই নয়, রত্নগুলো দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পিছনে বড় অবদান রয়েছে ‘গোদরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ় গ্রুপ’-এরও। এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠীই সোথেবি'স-এর কাছ থেকে ব্যক্তিগত ভাবে ৩৪৯টি রত্নের এই পুরো সংগ্রহটি কিনেছে। এর পরে হংকং থেকে বিমানে নয়াদিল্লির উড়িয়ে নিয়ে আসা হয় রত্নগুলো। বিমানবন্দর সেগুলো গ্রহণ করেন ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। বর্তমানে এগুলো জাতীয় জাদুঘরে রাখা হয়েছে।