ঢাকা : বিনা বিচারে সাত বছর ধরে কারাগারে থাকা চার নারী বন্দির জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি আরও শুনানি করে আদেশ দেয়ার জন্য ঠিক করেছে হাইকোর্ট।
এই ৪ নারী বন্দিরা হলেন নারায়ণগঞ্জের শাহনাজ বেগম, সুমি আক্তার রেশমা, গাজীপুরের রাজিয়া সুলতানা ও ময়মনসিংহের রানী ওরফে নূপুর।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন ঠিক করে দেয়। আদালতে আজ চার নারী বন্দির পক্ষে শুনানি করেন লিগ্যাল এইডের আইনজীবী আইনুর নাহার সিদ্দিকা।
এর আগে সকালে বিনা বিচারে সাত বছর ধরে কারাগারে থাকা চার নারী বন্দিকে হাইকোর্টে হাজির করেন কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ। গত ৩০ নভেম্বর এই চার নারী বন্দিকে কেন জামিন দেয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারি করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়।
পৃথক চারটি হত্যা মামলায় বিনা বিচারে অনেক দিন ধরে কারাগারে থাকা চার নারীকে আদালতে হাজির করা হয় এবং তাদের বক্তব্য শুনেন আদালত। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর ওই চার নারীকে আজ ১৬ জানুয়ারি আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়া হয়। নথিপত্রে দেখা যায়, শ্যামপুর থানায় করা এক হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সুমি আক্তার ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন। দোহার থানার এক হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জের শাহনাজ বেগম ২০০৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে।
তুরাগ থানার এক হত্যা মামলায় গাজীপুরের রাজিয়া সুলতানা ২০০৯ সালের ২১ মে থেকে কারাগারে। রমনা থানার এক হত্যা মামলায় ময়মনসিংহের রানী ওরফে নূপুর ২০০৯ সালের ২১ নভেম্বর থেকে কারাগার। এরপর থেকে এসব মামলায় তাদেরকে ৫০-৭৬ বার আদালতে হাজির করা হয়েছে। কিন্তু আজ অবধি এসব মামলার বিচার শেষ হয়নি। বিচার শেষ না হওয়ায় প্রায় আট বছর ধরে তারা কারাগারে বিনা বিচারে বন্দী রয়েছে।
সুপ্রিমকোর্টের লিগ্যাল এইড কমিটি নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এই চার বন্দীর তথ্য পান আজ ঐ লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আইনুর নাহার সিদ্দিকা বন্দীর তথ্য আদালতে উপস্থাপন করেন। আদালত আইনজীবীর কাছে জানতে চান উপস্থাপন করা তথ্য সঠিক কিনা।
আইনজীবী তথ্য উপাত্ত সব সঠিক রয়েছে। নিজস্ব আইনজীবী না থাকায় তারা বিনা বিচারে কারাগারে আটক রয়েছেন। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে চার বন্দীর বিষয়ে এই আদেশ দেন।