
ফাইল ছবি
কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে এক যাত্রীর অবহেলাজনিত মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৮৫ বছর বয়সি মার্কিন নাগরিক ও অবসরপ্রাপ্ত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অশোকা জয়াওয়ীরা বিমানে আমিষ খাবার খেতে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে মারা যান। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে কলম্বো যাওয়ার পথে কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে। অশোকা জয়াওয়ীরা ওই বছর ২৩ জুন কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট বুক করেছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ড. জয়াওয়ীরা আগে থেকেই নিরামিষ খাবার চেয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি নিরামিষাশী ছিলেন। কিন্তু ভুলবশত সাড়ে ১৫ ঘণ্টার দীর্ঘ বিমান সফরে তাকে মাংসসহ আমিষ জাতীয় খাবার দেওয়া হয় এবং খেতে বাধ্য করা হয়।
কেবিন ক্রু তাকে বলেছিলেন, কোনও নিরামিষ খাবার নেই। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মাংস খাওয়ার সময় খাবারটি গলায় আটকে যায় এবং শ্বাস নিতে না পেরে ড. জয়াওয়ীরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ড. জয়াওয়ীরার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কাতার এয়ারওয়েজের ক্রু সদস্যরা তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। তবে পাইলট জরুরি অবতরণ করতে পারেননি। এরপরেই ৩১ জুলাই তার ছেলে কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতে মামলা দায়ের করে।
পরিবারের দাবি, বিমান কর্তৃপক্ষ যাত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করেছে এবং জরুরি পরিস্থিতিতে যথাযথ সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযোগ অনুসারে, কেবিন ক্রুরা মেডএয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এই পরিষেবার মাধ্যমে বিমান-প্রশিক্ষিত ইআর চিকিৎসকরা দূরে থেকেও কেবিন ক্রুদের ফ্লাইটের মধ্যে চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি পরিষেবা নিয়ে নির্দেশ দেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, প্রথমে ড. জয়াওয়ীরার অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৬৯ শতাংশ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। পরে তাকে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধও দেয়া হয়েছিল, কিন্তু ক্রুরা তাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হয়। মৃতের পুত্র সূর্য জয়াওয়ীরা বলেন, সেই সময় মধ্য-পশ্চিমের উপর দিয়ে বিমানটি যাচ্ছিল এবং সহজেই অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়া যেত। এই ঘটনায় অশোকা জয়াওয়ীরার ছেলে সূর্য বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। সেই সঙ্গে অবহেলাজনিত মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। তিনি মন্ট্রিল কনভেনশনের মাধ্যমে নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন। মামলাটি এখন আদালতের বিচারাধীন। কাতার এয়ারওয়েজ এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য করেনি। ঘটনাটি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনায় এসেছে।