ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : দেশের পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট-আখাউড়া সেকশনের শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় লাল গুদামে দীর্ঘ দশ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন অবৈধ পোল্ট্রি খামারি মালিক। গুদামের গাঁ ঘেষেই রেলস্টেশনের ভূমিতে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গড়ে তুলছেন স্থায়ী পাকা দেয়ালের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এভাবে রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমি ও প্রতিষ্ঠান বেহাত হচ্ছে। ফলে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় রেলওয়ের এসব ভূমি ও পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠান বেদখল হলেও দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেকশনের জনগুরুত্বপূর্ণ শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ পার্শ্বে পরিত্যক্ত লাল গুদামে দীর্ঘ দশ বছর ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পোল্ট্রি খামার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। রেলওয়ের পরিত্যক্ত গুদামে দিনের পর দিন পোল্ট্রি খামার ব্যবসা চালিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে নির্বিকার। পোল্ট্রি খামারে মোরগের বিষ্টায় দুর্গন্ধে আশপাশ এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে এবং জনসাধারণ তীব্র দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্টেশনের এই গুদামে এক সময়ে রেলপথের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সহ অন্যান্য লোহা ষড়ঞ্জামাদি রাখা হতো। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনরূপ অনুমতি ছাড়াই এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তি মালিকানায় পোল্ট্রি খামার ব্যবসায়ী এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। খামারের পার্শ্ববর্তী রেলস্টেশনের ভূমিতে আরও এক প্রভাবশালী ব্যক্তি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য গড়ে তোলছেন বেশ কয়েকটি পাকা দোকানঘর।
স্টেশনের আশপাশ জুড়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা কর্তৃপক্ষের কোনরূপ অনুমতি ছাড়াই এভাবে একের পর এক প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও দখলে নিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে রেল স্টেশনের প্রয়োজনীয় ভূমি ও পূর্বের নির্মিত প্রতিষ্ঠান সমুহ বেদখল হওয়ায় এবং এলোপাতাড়ি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে স্টেশন এলাকায় বিশৃঙ্খলা, নোংরা পরিবেশ দেখা দিয়েছে।
তবে অভিযোগ বিষয়ে পোল্ট্রি খামারি মোঃ নূরুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের ঢাকা অফিস থেকে লিজ নিয়ে দশ বছর ধরে লাল খাদ্য গোদামে পোল্ট্রি খামার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। রেলওয়ের কোন সেকশন থেকে লিজ গ্রহন করেছেন সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারেননি এবং কোন কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে খাদ্য গুদামের পাশে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনকারী হাজী সাহেদ আহমদ বলেন, মনোয়ার হোসেন এর লিজকৃত ভূমিতে আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছি। অবৈধ কোন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়নি।
শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ লাল খাদ্য গোদামে পোল্ট্রি খামার স্থাপন ও রেলস্টেশনের ভূমিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমার জানামতে কোন অনুমতি বা লিজ না নিয়েই স্থানীয় একটি মহল এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জিআরপি পুলিশকে জানানো হয়েছে।
অভিযোগ বিষয়ে রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা মোঃ অহিদুন নবী এ প্রতিবেদককে বলেন, সম্প্রতি আমি দায়িত্ব নিয়েছি। বর্তমানে রেলওয়ের কোন ভূমি বন্দোবস্ত দেয়া হচ্ছে না। শমশেরনগর স্টেশন এলাকায়ও কোন বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি। লাল খাদ্য গোদামে পোল্ট্রি খামার ও পার্শ্ববর্তী ভূমিতে প্রতিষ্ঠান স্থাপন বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।
বহুমাত্রিক.কম