ফাইল ছবি
আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য ড. মতিউর রহমান দেশেই আছেন। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়েছে, তিনি মাথা ন্যাড়া করে দেশ থেকে পালিয়েছেন। তিনি মাথা ন্যাড়াও করেননি, দেশ থেকে পালিয়েও যাননি।
শুধু দেশেই আছেন তা নয় সংযুক্তি দেয়ার একদিন পর সোমবার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডিতে) তিনি যোগদান করেছেন। তবে তিনি অসুস্থ থাকায় বাহক মারফত চিঠি দিয়ে তিনি যোগদান করেছেন। অসুস্থতার কারণে তিনি সোমবার অফিস করেননি।
মঙ্গলবার তিনি অফিস করতে পারেন অথবা ছুটি নিতে পারেন।
দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া, মাথা ন্যাড়া করা ও সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে সোমবার খোলাসা করেন ড. মতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এত মিথ্যাচার কারা করে? কেনো করে বুঝতে পারছি না। আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। অনবরত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে একটি গ্রুপ।’ মাথা ন্যাড়া করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, ‘আমি মাথা ন্যাড়া করব কেনো? কখনো আমি মাথা ন্যাড়া করিনি। আর দেশ থেকেও পালিয়ে যাইনি। পালাব কেনো?’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার স্ত্রী নির্বাচন করবেন। সেই নির্বাচন ঠেকানোর জন্য একটি গ্রুপ এই ধরনের মিথ্যাচার করছে।’
এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মো. মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় সোমবার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন সোমবার এই আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আহমেদ আলী সালাম।
পিপি মীর আহমেদ আলী বলেন, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ দুদক অনুসন্ধান করছে। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এজন্য তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে দুদক। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
এবার পবিত্র ঈদুল আজহার সময় এনবিআরের সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। ছেলের বিলাসী জীবনযাপনের সূত্র ধরেই মতিউরের সম্পদের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
আর এতেই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা একের পর এক সম্পদের তথ্য বেরিয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত তার দুই স্ত্রী, সন্তান, ভাইবোনসহ নিকটজনদের নামে ছয় জেলায় জমি, ফ্ল্যাট, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, রিসোর্টসহ নানা সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। এর বাইরে পুঁজিবাজারেও তার বিনিয়োগ রয়েছে।
আলোচিত এই কর্মকর্তা ও তার স্বজনদের নামে থাকা এখন পর্যন্ত ৬৫ বিঘা (দুই হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে। তার নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক।ৃ