
ছবি: বহুমাত্রিক.কম
পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে জরিমানা ও বিপুল নিষিদ্ধ পলিথিনের শপিং ব্যাগ জব্দের পরও গাজীপুরে একটি কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ সামনে এসেছে। গাজীপুর মহানগরীর পূর্ব ভুরুলিয়া আবাসিক এলাকায় স্থাপিত অনুমোদনহীন ভবনে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন কারখানার বেপরোয়া কর্তৃপক্ষ। এলাকার লোকজনের আপত্তি কানে তুলছেন না কারখানার মালিক কবির শাহাদাৎ। শুধু নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনই নয়, কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত বায়ু ও শব্দ দূষণ থেকেও প্রতিকার চান অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভূরুলিয়া আবাসিক এলাকায় কারখানা স্থাপন করে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করে যাচ্ছে কাটি বাংলাদেশ লিমিটেড। কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়া আবাসিক এলাকায় কারখানা স্থাপন করে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পণ্য উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। আবাসিক এলাকায় এ ধরনের কারখানা পরিচালনা করায় স্থানীয়রা মৌখিকভাবে আপত্তি জানালেও কারখানাটির মালিক মোঃ কবির শাহাদাৎ কর্ণপাত করেনি।
এদিকে, গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গত ১০ মার্চ কারখানার মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন এ জরিমানা করেন এবং এ অভিযানে ১২ হাজার কেজি পলিথিন শপিং ব্যাগ জব্দ করেন। এর কিছুদিন পর আবারও পলিথিন উৎপন্নের কার্যক্রম চালু করে তা অব্যাহত রাখেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, যে ভবনে কারখানা পরিচালনা করা হচ্ছে সেই ভবনেরও কোন অনুমোদন নেই বলে জানা গেছে। ভবনের অনুমোদিত নকশা চেয়ে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গত ১৫ জানুয়ারি নোটিশ দিলেও তারা কোন জবাব দেয়নি। পরে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কারখানাটি পরিদর্শন করে। পরিদর্শনের সময়ও কারখানার মালিকপক্ষ বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান জানান, কারখানার স্থাপনার বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তাদেরকে নোটিশ দেওয়া হলেও কোন জবাব দেয়নি। আমরা আরও একটি নোটিশ জারি কারার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্তোষজনক জবাব না পেলে পরবর্তীতে তাদেরকে উচ্ছেদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, পলিথিন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নির্গত কেমিক্যাল মিশ্রিত ধোঁয়া ও শব্দ দূষণে আমরা অতিষ্ঠ। কারখানাটি থাকায় আমরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। কারখানাটি বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আমরা অনুরোধ করছি।
কারখানার মালিক কবির শাহাদাৎ এ বিষয়ে বলেন, ‘এখানে অবৈধ কিছু থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আমি এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।’
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল বলেন, ‘পূর্বে আমরা কারখানাটিকে জরিমানা করেছিলাম। সেই সময় কারখানার মালিক পক্ষকে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। যেহেতু তারা উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখেননি এবং আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়েছি, কারখানাটির বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।