
ছবি- সংগৃহীত
শরীয়তপুরের জাজিরায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মাদক বিরোধী অভিযান চলাকালে মিলন বেপারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের দাবি ডিবির মারধরের শিকার হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আর পুলিশ বলছে, আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবাররাত সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু বেপারী কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত মিলন বেপারী ওই এলাকার মৃত আমজাদ বেপারীর ছেলে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে জাজিরা পদ্মা সেতু এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান চালায় জেলার গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক নওশের আলীসহ ৮ জন সদস্য। অভিযান চলাকালে মোজাম্মেল নামের এক ব্যক্তিকে গাঁজাসহ আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কালু বেপারী কান্দি এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জামাল বেপারীর প্রতিবেশী ও মামা মিলন বেপারী আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে তার মৃত্যু হয় বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।
তবে পরিবারের অভিযোগ, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে ঘর থেকে বের করে মারধর করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। তখন তার নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। পরবর্তীতে তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
নিহতের স্ত্রী রেনু বেগম বলেন, ‘ডিবি পরিচয়ে রাতে বাড়ি তল্লাশি করার পর আমার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে। মারধর করায় তার মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের ছেলে আল-আমিন বলেন, ‘আমাদের সামনে আমার বাবাকে ডিবির লোকজন মারধর করেছে। মারধর করলে তার মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে মারা গেছেন। ডিবির লোকজন আমার বাবাকে মেরেছে।’
এ ব্যাপারে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আকরাম এলাহী বলেন, ‘শনিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে মরদেহ নিয়ে আসা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলাফল আসলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।’
জানতে চাইলে জেলার গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আবু বকর মাতুব্বর বলেন, ‘পদ্মা সেতু এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী জামাল বেপারীর বাড়িতে অভিযান চলাকালে তার মামা মিলন বেপারী খবর পেয়ে ছুটে আসার সময় আতঙ্কিত হয়ে মাটিতে পড়ে যান। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ডিবির সদস্যরা তার পরিবারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। আমরা তখন আসামিদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসি। পরে শুনতে পাই মিলন বেপারী নাকি মারা গেছেন। তবে ডিবির মারধরের বিষয়টি সত্য নয়। তদন্ত শেষে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করা যাবে।
মৃত মিলন বেপারীর ৩ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তান রয়েছে।