ঢাকা : বিশ্ব দরবারে নিজ দেশের পতাকাকে সমুজ্জ্বল রাখতে টানা ২৫ দিন তবলা কিংবা পাঁচ দিন ড্রাম সেট বাজানো-সহজ কথা নয়। এর জন্য যেমন চরম ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হবে। তেমনি প্রয়োজন প্রশিক্ষণ, আর্থিক স্বচ্ছলতা। বাংলাদেশের পণ্ডিত সুদর্শন দেখিয়ে দিলেন লক্ষ্য অটুট থাকলে সব কিছুই সম্ভব। অসম্ভবকে সম্ভব করে চার চারটি বিশ্ব রেকর্ড এখন তার হাতে।
তবলার নানা ধুন বাজিয়ে চলেছেন পণ্ডিত সুদর্শন দাশ। ছুটিতে বেড়াতে এসে`ও থেমে নেই তার সাধনা। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের কারণে সুদর্শন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন বিশ্ব মাতাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই চারটি বিশ্ব রেকর্ডের মালিক চট্টগ্রামের ছেলে সুদর্শন। ২০১৬ সালে একটানা ৫শ ৫৭ ঘণ্টা ১১ মিনিট তবলা বাজিয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। এরপরই যেন রেকর্ডের নেশায় পেয়ে বসে তাকে। ২০১৭ সালে একটানা ২৭ ঘণ্টা ঢোল, ২০১৮ সালে ১৪ ঘণ্টা ড্রাম রোল এবং সবশেষ চলতি বছর ১শ ৪০ ঘণ্টা ড্রাম সেট বাজিয়ে তিনি চতুর্থ রেকর্ডটি নিজের দখলে নেন।
তবলা ও ঢোল বাজিয়ে বিশ্ব রেকর্ড স্থাপনকারী পণ্ডিত সুদর্শন দাশ বলেন, অনেক মানুষের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। প্রায় ১৫ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করেছিলাম এবং আমার পক্ষ থেকে কিছু টাকা দিয়েছি।
কলকাতার শান্তি নিকেতনে তবলার উপর সাত বছরের উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন সুদর্শন। এর মধ্যে ২০১২ সালে ওয়ার্ল্ড গিনেজ রেকর্ডের কাছে আবেদন জানান তিনি। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় রেকর্ড অর্জনে তার চূড়ান্ত পরীক্ষা। আর তাকে পুরোদমে সহযোগিতা করে আসছে লন্ডনের তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমি।
লন্ডনের তবলা অ্যান্ড ঢোল অ্যাকাডেমির শিক্ষক মাইকেল ব্রড বলেন, তিনি খুব পরিশ্রম করেছেন। এটা অবিশ্বাস্য একটা অর্জন।
সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির এই বাংলাদেশ নিয়ে অন্যরকম এক স্বপ্ন সুদর্শনের। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের তার তবলার ধুনের সাথে বাঁধতে চান তিনি।পণ্ডিত সুদর্শন দাশ বলেন, সম্প্রতি কলকাতা ও চট্টগ্রামে আমরা অসচ্ছল শিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করেছি। তাদের বিনামূল্যে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
আগামীতে নিজের গড়া রেকর্ডগুলো ভেঙে তবলা এবং ঢোল বাজানোকে অন্যরকম এক উচ্চতায় নিতে চান পণ্ডিত সুদর্শন দাশ।