
সরকারি নির্দেশনায় সার দেশে আনুপাতিকহারে বিদ্যুতের লোড শেডিং শুরু হলেও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১০ ঘন্টা লোডশেডিং চলছে। এক ঘন্টা পর এক ঘন্টা করে লোডশেডিং-এ উপজেলার ৬৮ হাজার গ্রাহকের সাথে কলকারখানা, ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্য সেবায় চরম ভোগান্তি শুরু হয়েছে। দিনের বেলা লোডশেডিং হলেও রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় লোডশেডিং সাধারণ মানুষজন অসহ্য করতে পারছেন না।
চিকিৎসক আব্দুল মোত্তাকীন, সুজা কলেজের প্রভাষক শাহজাহান মানিক, হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সালাহউদ্দীন তফাদার বলেন, বিদ্যুৎ সংকটে এর আগেও লো শেডিং করা হতো। তবে এবার প্রচ- গরমের সময় অধিক মাত্রায় লোডশেডিং হচ্ছে। সকাল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত দিনে রাতে ২৪ ঘন্টায় একঘন্টা, দু’ঘন্টা অন্তর করে ১০ ঘন্টা লোড শেডিং করা হচ্ছে। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানায় দুর্ভোগ ও বাসাবাড়িতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার খুবই কষ্ট হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জে চাহিদার তুলনায় যে বিদ্যুৎ পাচ্ছে তাতে আনুপাতিকহারে ২৪ ঘন্টায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা লোড শেডিং দেওয়া যেত বলে তারা মন্তব্য করেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী ফজলুর রহমান, ফারহানা রহমান বলেন, এত বেশী লোড শেডিংএ তারা স্বাভাবিকভাবে পড়াশুনা করা যাচ্ছে না। টিভিতে নিউজে দেখেছে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেছেন সর্বোচ্চ দু’তিন ঘন্টা লোড শেডিং হবে। তা হলে কমলগঞ্জে কেন ১০ ঘন্টা লোড শেডিং কেন হচ্ছে? কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এম মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, বিদ্যুৎ সংকটের কারণে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হচ্ছে। তবে এভাবে ঘনঘন লোড শেডিং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে।
সোনালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখা ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রিপন মজুমদার ও পূবালী ব্যাংক শমশেরনগর শাখা প্রধান বলেন, বিদ্যুৎ লোড শেডিং স্বাভাবিক ব্যাংক সেবা বিঘিœত করছে। এখন প্রতিদিন জেনারেটারে গড়ে ১ হাজার টাকার তেল পুড়িয়ে ব্যাংক সেবা স্বাভাবিক রাখা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ গ্রাহক হচ্ছেন ৬৮ হাজার। ৬৮ হাজারে দিনে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১৫ মেগাওয়াট। আর রাতে চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট। বর্তমানে কমলগঞ্জে দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় মাত্র ৫ মেগাওয়াট আর রাতে ১০ মেগাওয়াট। কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন তিনটি সাব স্টেশন আছে। তিনটি সাব স্টেশনে ৩ টি ফিডারে এক ঘন্টা অন্তর লোড শেডিং করতে হচ্ছে। কমলগঞ্জে চাহিদার চেয়ে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ পেলে লোড শেডিং অনেক কমে যেত বলে এ আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়।
মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কমলগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহা ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মীর গোলাম ফারুক বলেন, সরকারি নির্দেশনা ও তাদের চাহিদার তুলনায় যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে এভাবে লোড শেডিং করা হচ্ছে। এখানে স্থানীয়ভাবে কিছ্ ুকারার নেই। তিনি আশাবাদি আগামী বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে আর তখন থেকে লোড শেডিংও কমে যাবে।
বহুমাত্রিক.কম