
ছবি- সংগৃহীত
রাজধানীর উত্তরায় নগদ এজেন্টের কর্মচারিদের র্যাব পরিচয়ে গাড়িতে উঠিয়ে ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের গায়ে র্যাবের জ্যাকেট ছিল। নিবার সকালে উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৩৭ বাড়ির তিন তলায় থাকেন। বাসা থেকে আনুমানিক পাঁচশ' মিটার দূরে ১৩ নম্বর রোডে তার অফিস। ছিনতাই হওয়া টাকা তার বাসায় ছিল। শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে টাকার ব্যাগ নিয়ে নয়নের অফিসের চার কর্মচারি লিয়াকত হোসেন, কাওসার আহমেদ, আব্দুর রহমান এবং মো. ওমর দুটি মোটরসাইকেলে নগদের ওই অফিসে যাচ্ছিলেন। এর আগেই তিন রাস্তার মোড়ের একপাশে মাইক্রোবাসের মতো একটি গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল দুর্বৃত্তরা। মোটরসাইকেল নিয়ে তারা তিন রাম্তার মোড় পার হতেই কালো রংয়ের গাড়িটি নিয়ে উল্টো পথে মোটরসাইকেল গতিরোধ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলের পেছনে বসা দুজন টাকার ব্যাগ নিয়ে দৌঁড় দেন। তখন র্যাবের জ্যাকেট পরিহিত ব্যক্তিরা অস্ত্র হাতে তাদের ধাওয়া করে ধরে।
একজনকে ধরতে পারলেও কাওসার আহমেদ পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তার কাছে ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ছিল। সেই টাকাটা নিতে পারেনি দুর্বৃত্তরা। অপর তিনজনকে গাড়িতে তুলে চোখমুখে বেঁধে ফেলা হয়। গাড়ি নিয়ে ছিনতাইকারীরা দিয়াবাড়ির দিকে রওনা হয় দৃর্বৃত্তরা। গুলি করার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছে থাকা চারটি ব্যাগে ১ কোটি ১৮ লাখ ৭১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে তিনজনকে ফেলে দিয়ে গাড়িটি তুরাগের দিকে চলে যায়।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর এবং সিসিক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ছিনতাইকারীদের গায়ে র্যাবের জ্যাকেট ছিল। র্যাব পরিচয়ে ছিনতাই করা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্তের কাজ চলছে।
নগদের ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়ন সমকালকে বলেন, ঈদের ছুটিতে ব্যাংক বন্ধ থাকায় টাকা জমা দেওয়া যায়নি। ছুটির মধ্যে ব্যবসার টাকা আমার বাসায় রাখা ছিল। শনিবার উত্তরার ইসলামী ব্যাংক শাখা বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা ছিল। আমি একটি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমার পার্টনার তারিকুজ্জামানও ছিলেন না। তাই ব্যাংকে এবং বুথে জমা দেওয়ার জন্য চার কর্মচারিকে দিয়ে ওই টাকা অফিসে পাঠানো হচ্ছিল। প্রথমে টাকা নিয়ে অফিসে রাখার কথা ছিল। তারা বাসা থেকে বের হওয়ার কয়েক মিনিট পর টাকা ছিনতাইয়ের খবর পাই। একজন কর্মচারি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল।
ডিএমপরি উত্তরা বিভাগের পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জানান, ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া চারজনকে থানায় নিয়ে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ছুটির মধ্যে কোটি টাকার উপরে বহন করলেও তারা পুলিশের সহায়তা চাননি। এসব বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মোটরসাইকেল দুটি ঘটনাস্থলে পরেছিল। পরে উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে।