ছবি: বহুমাত্রিক.কম
খুলনা : ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এ দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যেক গ্রামের মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে।
প্রায় প্রত্যেক বাড়ি থেকে স্বাধীনতার জন্য মানুষ জীবন উৎস্বর্গ করেছে। দু’-একজন রাজাকার ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা সারাদেশের মানুষের অর্জন। আজকের তরুণদের উপলব্ধি করতে হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এমনি এমনি আসেনি। বহু মানুষের ত্যাগে এ স্বাধীনতা এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় সারা দেশের মানুষের বিজয়।
তিনি শনিবার নগরীর উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ড. মো. মোজাহারুল ইসলামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃত্তি প্রদান এবং অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
মোজাহারুল ইসলাম ও শার্লী ইসলাম ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আযোজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান।
কামাল হোসেন বলেন, ‘নীতির প্রশ্নে, স্বাধীনতার প্রশ্নে বাঙালি তরুণরা সব সময় আপোষহীন। সেই ইতিহাস ধরেই ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’ নির্বাচনে ২৭ বছরের যুবকের কাছে সে সময়ের মুখ্যমন্ত্রীর পরাজয় হয়েছিল। বাঙালি কখনো আপোষ করেনি। বাঙালি তরুণদের রুখতে আইয়ুব খান পারেনি, মোনায়েম খাঁ পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানি সৈন্যরা প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছাত্রদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। হত্যা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। তারপর শহীদ মিনার গুড়িয়ে দিয়েছে। আজও দেশ-বিদেশের বাঙালিরা শহীদ মিনারে গিয়ে গভীর শ্রদ্ধাভরে শহীদদের স্মরণ করে।’
তরুণদের উদ্দেশে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে আমরা সবাই মানুষ হব। মানুষ আমাদের হতেই হবে। বাংলাদেশের একটা অসম্ভব ভবিষ্যৎ রয়েছে। এদেশে যোগ্যতার ভিত্তিতে সবকিছু হতে হবে। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক সব জায়গায় যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। এটাই স্বাধীনতার অন্যতম শর্ত ছিল। এখনো আছে।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন, নীতিবান মানুষ ছিলেন, সৎমানুষ ছিলেন। তিনি হুমকি উপেক্ষা করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আজীবন মানবাধিকারের জন্য কাছ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে আইনের ভিত্তিতে সব কিছু হতে হবে। আইনের মধ্যে কোনো ‘ম্যানেজ’ থাকবে না। অন্যকোনো পেশাতেও ম্যানেজ শব্দ থাকবে না। সৎ মানুষরা ম্যানেজ শব্দটা বোঝে না। আমরা সবাই সৎভাবে, পরিশ্রম করে সফলতা অর্জন করতে চাই। দুর্নীতি থেকে যদি আমরা মুক্ত না হই তাহলে আমরা কোনো কিছুই অর্জন করতে পারব না।’’
পরে ড. কামাল হোসেন ১১জন কৃতী স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে ড.মোজাহারুল ইসলাম শিক্ষা বৃত্তি প্রদান এবং অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন ফাউন্ডেশনের সম্পাদক আয়েশা হান্নান ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ব্যারিস্টার তৌফিক আহমেদ মার্কস।
বহুমাত্রিক.কম