Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মর্যাদাপূর্ণ এপিএস ফেলো নির্বাচিত হলেন বাংলাদেশের ড. তোফাজ্জল

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৫৭, ২৩ মে ২০২২

আপডেট: ০০:৩১, ২৪ মে ২০২২

প্রিন্ট:

মর্যাদাপূর্ণ এপিএস ফেলো নির্বাচিত হলেন বাংলাদেশের ড. তোফাজ্জল

ছবি- সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই) এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম আমেরিকান ফাইটোপ্যাথোলজিক্যাল সোসাইটি (এপিএস) এর ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিকভাবে মনোনীত বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডারে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ প্রতিবছর ৫-১০ জন বিজ্ঞানীকে এপিএস নতুন ফেলো নির্বাচন করা হয়। এপিএস-এর ১১২ বছরের ইতিহাসে তিনিই প্রথম বাঙালী এপিএস ফেলো। আজীবনের জন্য নির্বাচিত একজন এপিএস ফেলো হিসাবে তার জীবনবৃত্তান্ত আমেরিকান ফাইটোপ্যাথোলজিক্যাল সোসাইটি-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে

https://www.apsnet.org/members/give-awards/awards/2022Awardees/Pages/ Fellow_Islam_Tofazzal.aspx 

বাংলাদেশে আধুনিক বায়োটেকনোলজির প্রয়োগে কৃষিতে একটি নতুন বিপ্লব সাধনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম। ২০১৬ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৮ জেলায় ১৫,০০০ হেক্টরজমিতে ঘটে যাওয়া গমের মহামারীর সংকটকালে তিনিই প্রথম রোগজীবাণু ছত্রাকটির জীবনরহস্য বিশ্লষণের মাধ্যমে গমের শত্রু চিহ্নিত করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ঐ যুগান্তকারী গবেষণায় তিনি চারটি মহাদেশের ৩১ জন বিজ্ঞানীকে সম্পৃক্ত করে একটি জাতীয় সমস্যার সমাধান করেন। তার এ আবিস্কারের ফলে রোগটির মোকাবেলা করার জন্য কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়ায় পরবর্তী বছর গম ফসলের ক্ষতিহ্রাস করা সম্ভব হয়। বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকী গমের ব্লাস্ট রোগটি মোকাবেলায় তিনি জিন এডিটিং, ন্যানোটেকনোলজি, প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়াসহ আধুনিক বায়োটেকনোলজি প্রয়োগে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছেন।

সম্প্রতি, তিনি গমের ব্লাস্ট রোগ দ্রুত শনাক্তকরনের জন্য একটি সহজ জীবপ্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন, যা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের গম আমদানি-রপ্তানিতে (সঙ্গনিরোধে), গবেষণায় এবং কৃষকের মাঠে ব্যাপক ব্যবহারহবে। এ ছাড়াও তিনি ধান, গম এবং স্ট্রবেরি-তে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি আবিষ্কার করে কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ভেষজউদ্ভিদ এবং অণুজীব থেকে এ পর্যন্ত তিনি ৫০টির অধিক রোগজীবাণু প্রতিরোধী নতুন প্রাকৃতিক যৌগ বা এন্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন।

সম্প্রতি স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের প্লস বায়োলজিতে প্রকাশিত বিজ্ঞানীদের ডাটাবেস সম্পর্কিত এক প্রবন্ধে তিনি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ দুই শতাংশ বিজ্ঞানীদের একজন এবং বাংলাদেশে জীবপ্রযুক্তি, কৌলিতত্ত্ব এবং অণুপ্রাণ বিজ্ঞানে দেশের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীর স্থান লাভ করেন। অধ্যাপনা এবং গবেষণায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ইতিপূর্বে অধ্যাপক তোফাজ্জল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি, ২০২২ সালে বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমি এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব এগ্রিকালচার-এর ফেলো নির্বাচিত হন।

মৌলিক গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ দেশে-বিদেশে তিনি অনেক পুরষ্কার, মেডেল এবং এওয়ার্ড লাভ করেন। তন্মধ্যে, জীববিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য জ্যেষ্ঠ ক্যাটাগরিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমী স্বর্ণপদক-২০১১ (২০১৪ সালে প্রদত্ত), প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা ও ইসলামিক ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এর কাছ থেকে আইডিবি ইনোভেশন এওয়ার্ড-২০১৮, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ভোকেশনাল এক্সিলেন্স এওয়ার্ড-২০১৭, জীবনরহস্য বিশ্লেষণ পূর্বক গমের ব্লাস্ট রোগের উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ের জন্য কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট থেকে কমনওয়েলথ ইনোভেশন এওয়ার্ড-২০১৯, কেআইবি বেস্ট প্রেজেন্টার পুরস্কার-২০১৬, কৃষিবিজ্ঞানে মৌলিক গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পরপর দু’বার (২০০৪ এবং ২০০৭) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গবেষণা এওয়ার্ড এবং জাপানের জেএসবিবিএ শ্রেষ্ঠতরুণ বিজ্ঞানী পদক-২০০৩ উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি তিনি এটিএন বাংলা উন্নয়নে বাংলাদেশ এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বায়োটেকনোলোজিষ্ট এওয়ার্ড লাভ করেন।

অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার শশই গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৬৬ সালের ২০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer