ছবি: সংগৃহীত
লন্ডনে ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ শীর্ষক বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ঘোষণা করেছেন, ব্রিটেন ইউক্রেনকে ৫ হাজারেরও বেশি মাল্টিরোল ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের কর্মসূচি ত্বরান্বিত করেছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে ৫ হাজারেরও বেশি লাইটওয়েট মাল্টিরোল ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য কর্মসূচি ত্বরান্বিত করছি। এই কর্মসূচি বেলফাস্টে শত শত ভালো কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং শীতের তীব্রতার মধ্যে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য তারা নির্ধারিত সময়ের আগেই অতিরিক্ত ১৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য কাজ করছে।’
স্টারমার রাশিয়ার বৃহত্তম জ্বালানি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিও সমর্থন ব্যক্ত করেন। বলেন, ‘ইইউ থেকে সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজের পাশাপাশি রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঠিক কাজই করেছেন, যেমনটি যুক্তরাজ্যও করেছে। এবং আমাদের এখন এই চাপ বজায় রাখতে হবে।’
ডেনমার্ক জানিয়েছে, রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ থেকে ইউক্রেনের জন্য পুনর্গঠন ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত বড়দিনের আগেই হবে। কিয়েভকে মিরাজ যুদ্ধবিমান ও অ্যাস্টার প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফ্রান্স। এদিকে ক্রেমলিন বলছে, জব্দ করা রুশ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের চলমান সংকট ঘিরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে অনুষ্ঠিত হয় ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ শীর্ষক বৈঠক। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আয়োজিত এ সম্মেলনে সরাসরি যোগ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি, নেইটো মহাসচিব মার্ক রুট এবং নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি। বৈঠকের আগে উইন্ডসর ক্যাসেলে রাজা চার্লস তৃতীয়র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলেনস্কি। এ সময় ইউক্রেনের প্রতি ব্রিটেনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন রাজা। এরপর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্টারমারের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে জেলেনস্কি রাশিয়ার ওপর আরও চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
ওয়েস্টমিনস্টারে সম্মিলিত বৈঠকে পশ্চিমা নেতাদের কাছে ইউক্রেনের দূরপাল্লার হামলা সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা চান জেলেনস্কি, যাতে রাশিয়ার ভেতরে কৌশলগত হামলা জোরদার করা যায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রুশ তেল নিষেধাজ্ঞাকে ‘বড় পদক্ষেপ’ বলে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, এই চাপই কিয়েভের পক্ষে যুদ্ধ জয়ের পথ খুলে দেবে।
ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নতুন নিষেধাজ্ঞা পুতিনের ওপর চাপ বহুগুণ বাড়াবে। ইউক্রেনে শীতকালীন জ্বালানি সহায়তা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে নেদারল্যান্ডস।ডেনমার্ক জানিয়েছে, রাশিয়ার ফ্রিজ করা সম্পদ থেকে ইউক্রেনের জন্য পুনর্গঠন ঋণের সিদ্ধান্ত বড়দিনের আগেই হবে। মিরাজ যুদ্ধবিমান ও অ্যাস্টার প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ফ্রান্স। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির জন্য এটি ছিল তার প্রথম আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কিয়ার স্টারমার বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন শান্তির ব্যাপারে কখনোই আন্তরিক ছিলেন না। তিনি জেলেনস্কিকে আশ্বস্ত করে বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা মানেই তাদের নিরাপত্তা এবং ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও জোরদার করবে ইউরোপ।
অন্যদিকে মস্কো থেকে এসেছে কঠোর সতর্কবার্তা। ফ্রিজ করা রুশ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হলে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্রেমলিন। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা একটি অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপ। তবে তা রুশ অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারবে না।




