ফাইল ছবি
কলম্বিয়ার বামপন্থী প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি মাদক চোরাচালান রোধে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট পেত্রো মাদক কার্টেলগুলোকে বিকশিত হতে দিয়েছেন এবং এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর্মান্দো বেনেদেত্তি, প্রেসিডেন্ট পেত্রোর স্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ পুত্রকেও।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সম্ভাব্য সম্পদ ও সম্পত্তি জব্দ করা হবে এবং দেশটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। একসময় কলম্বিয়া ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ার অন ড্রাগস’ অভিযানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। প্রতি বছর দেশটি শত শত মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা পেত। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পেত্রো ও ট্রাম্পের মধ্যে ঘনঘন সংঘাত দেখা দিয়েছে। বেসেন্ট বলেন, সাবেক গেরিলা যোদ্ধা পেত্রো ক্ষমতায় আসার পর থেকে কলম্বিয়ায় কোকেন উৎপাদন কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে আমেরিকানদের বিষাক্ত করে তুলছে।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার কোনোভাবেই সহ্য করবেন না। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ বলেছে, কলম্বিয়া বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোকেন রপ্তানিকারক দেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি গুরুতর মাদক হুমকি সৃষ্টি করছে। শুক্রবার এক পৃথক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ার অ্যান্টি-নারকোটিক্স কার্যক্রমের স্বীকৃতি প্রত্যাহার করছে। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেসিডেন্ট পেত্রো এক্সে লিখেছেন, আমি দশকজুড়ে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের কোকেন ব্যবহারের হার কমাতে সাহায্য করেছি। তিনি আরও বলেন, এ এক সম্পূর্ণ বৈপরীত্য। কিন্তু আমরা এক ইঞ্চিও পিছু হটব না, কখনো নতজানু হব না।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাদের কার্যক্রম জোরদার করেছে। তারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় একাধিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যেগুলোকে তারা মাদক বহনকারী বলে দাবি করেছে। তবে এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ প্রকাশ করা হয়নি। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়াকে দেয়া সব ধরনের অর্থ সহায়তা ও ভর্তুকি স্থগিত করবে। এ পদক্ষেপটি আসে সেপ্টেম্বরে পেত্রোর বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারের পর, যেখানে তিনি মার্কিন বাহিনীর এই আক্রমণকে স্বৈরাচারের কাজ বলে অভিহিত করেন এবং অভিযোগ করেন, মার্কিন কর্মকর্তারা এক কলম্বিয়ান নাগরিককে হত্যা করে আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছেন।




