Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

কার্তিক ৯ ১৪৩২, শনিবার ২৫ অক্টোবর ২০২৫

থাইল্যান্ডের সাবেক রানি সিরিকিট আর নেই

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২০, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

প্রিন্ট:

থাইল্যান্ডের সাবেক রানি সিরিকিট আর নেই

ফাইল ছবি

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ণের মা রানি সিরিকিট ৯৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরোর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২১ মিনিটে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে এ মাসে রক্তে সংক্রমণও ছিল।

ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে রানি সিরিকিট ছিলেন থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম রাজত্বকালীন সম্রাট রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজের স্ত্রী। রাজা ভূমিবল ২০১৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজা ভাজিরালংকর্ণ থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরোকে রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন। রাজপ্রাসাদের তথ্য অনুযায়ী, রানির মৃতদেহ ব্যাংককের গ্র্যান্ড প্যালেসের দুশিত থ্রোন হলে শায়িত রাখা হবে। থাই রাজপরিবারের সদস্যরা এক বছরের শোক পালন করবেন। রানি সিরিকিটের মৃত্যুর কারণে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় আসিয়ান সম্মেলনে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

রানি সিরিকিট ১৯৫০ সালে প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুল্যাদেজকে বিয়ে করেন। তরুণী বয়সে তিনি ছিলেন ফ্যাশন আইকন হিসেবে পরিচিত। প্যারিসে সঙ্গীত অধ্যয়নকালে, যেখানে তার পিতা থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন, সেখানেই ভবিষ্যৎ স্বামী ভূমিবলের সঙ্গে তার প্রথম দেখা হয়। ১৯৮০ সালে বিবিসির ‘সাউল অব এ নেশন’ প্রামাণ্যচিত্রে তিনি মজা করে বলেন, ‘ওটা ছিল ঘৃণায় শুরু হওয়া এক দেখা’। কারণ রাজা নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা পর এসে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, তিনি বলেছিলেন বিকেল ৪টায় আসবেন। কিন্তু এলেন সন্ধ্যা ৭টায়। আমি তখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কুর্নিশের ভঙ্গি অনুশীলন করছিলাম। 

দুজনের বিয়ে হয় ১৯৫০ সালের ২৮ এপ্রিল রাজা ভূমিবলের রাজ্যাভিষেকের ঠিক এক সপ্তাহ আগে। ১৯৬০-এর দশকে এই রাজদম্পতি সারা বিশ্ব ভ্রমণ করেন। সাক্ষাৎ করেন তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট আইজেনহাওয়ার, প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং এলভিস প্রিসলির সঙ্গে। সে সময় তিনি প্রায়ই আন্তর্জাতিক ‘বেস্ট-ড্রেসড’ তালিকায় স্থান পেতেন।
১৯৮০ সালের সেই বিরল সাক্ষাৎকারে তিনি থাই রাজতন্ত্র ও জনগণের সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন। থাইল্যান্ডে এখনো ‘লেসে মাজেস্তে’ আইন বহাল আছে। এ আইনে রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে কোনো সমালোচনা, অপমানজনক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের রাজা ও রানিরা সব সময় জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখেন। জনগণ রাজাকে জাতির পিতা হিসেবে দেখেন। ‘তাই আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের জায়গা খুব কম, কারণ আমাদের জাতির পিতা-মাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’ রানি সিরিকিট ছিলেন দেশের এক গুরুত্বপূর্ণ মাতৃমূর্তি। তার জন্মদিন ১২ আগস্ট ১৯৭৬ সাল থেকে থাইল্যান্ডে মাদার’স ডে বা মা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২০১২ সালে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তিনি খুব কমই জনসমক্ষে আসতেন। রানি সিরিকিট রেখে গেছেন এক পুত্র (রাজা ভাজিরালংকর্ণ) এবং তিন কন্যাকে।

Walton Refrigerator cables
Walton Refrigerator cables