ঢাকা : ভারতীয় ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হলেন রবি শাস্ত্রী। আজ ভারতের নতুন কোচ হিসেবে শাস্ত্রীর নাম ঘোষণা করে দ্য বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। ভারতীয় গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
সোমবার ভারতীয় দলের কোচর জন্য আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলো বিসিসিআইর ক্রিকেট এডভাইজারি কমিটি (সিএসি)। এরপর তাদের সিদ্ধান্ত বিসিসিআইকে জানিয়ে দেয় সিএসি। কিন্তু অধিনায়ক বিরাট কোহলির জন্য অপেক্ষা করতেই কিছুদিন পর কোচের নাম ঘোষনার ইঙ্গিত দেয় বোর্ড। অবশেষে আর সময়ক্ষেপণ না করে আজই ভারতের নয়া কোচ হিসেবে শাস্ত্রীর নাম ঘোষণা করলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে থাকবেন শাস্ত্রী।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের পরই ভারতের কোচের পদ থেকে সড়ে দাঁড়ান অনিল কুম্বলে। অধিনায়ক কোহলির সাথে দ্বন্দে জড়িয়ে নিজেই কোচের পদ থেকে অব্যাহতি দেন কুম্বলে। তাই কোচ ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাঁচটি ওয়ানডে ও ১টি টি-২০ ম্যাচ খেলে ভারত।
কিন্তু এ মাসেই শ্রীলংকা সফরে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে ভারত। তাই লংকান সফরকে মাথায় রেখে দ্রুতই ভারতের কোচ নিয়োগের জন্য গতকাল আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নেন সিএসির তিন সদস্য ও দেশটির সাবেক খেলোয়াড় শচীন টেন্ডুলকার-সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভিভিএস লক্ষ্মন।
ভারতের কোচ হবার জন্য ডজন খানেকের বেশি আবেদন জমা পড়ে বিসিসিআই কার্যালয়ে। সেখান থেকে বাছাই করে সাক্ষাৎকারের জন্য ছয়জনকে নির্দিষ্ট করেন সিএসি। এরপর তিন সদস্য মিলে আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে ভারতের কোচ হিসেবে শাস্ত্রীকেই চূড়ান্ত করেন।
কোচ হিসেবে আবেদন করার ইচ্ছা শুরুতে ছিলো না শাস্ত্রীর। টেন্ডুলকারের আগ্রহে গেল ৩ জুলাই কোচের জন্য আবেদন করেন তিনি। এমন খকর প্রচার মাধ্যমে আসার পর অনেকেই কোচ হবার দৌঁড়ে শাস্ত্রীকে এগিয়ে রাখেন। এছাড়া অধিনায়ক কোহলির সাথে শাস্ত্রীর সর্ম্পকও বেশ ভালো। ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় হারের পর ভারতীয় টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পান শাস্ত্রী।
দায়িত্ব নিয়ে ভারতীয় দলকে বদলে দেন শাস্ত্রী। ২০১৫ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করে সেমিফাইনালে পৌঁছায় ভারত। কিন্তু সেখানে আর পেরে উঠতে পারেনি তারা। সেমি থেকে বিশ্বকাপের মিশন শেষ করে টিম ইন্ডিয়া।
এরপর শ্রীলংকার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয় করে ভারত। এরপর দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নেয় ভারত।
খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৮১ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ডেব্যু হয় শাস্ত্রী। একই বছর আহমেদাবাদে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে অভিষেক হয় তার।
ভারতের হয়ে ৮০ টেস্টে ৩৮৩০ রান করেন শাস্ত্রী। গড়- ৩৫ দশমিক ৭৯। এছাড়া বল হাতেও ১৫১ টেস্ট উইকেট নেন বাঁ-হাতি এই স্পিনার। তাই আশি-নব্বই দশকে ভারতের অলরাউন্ডার হিসেবে বেশ পরিচিত পান শাস্ত্রী।
টেস্টের মত ওয়ানডেতেও বেশ সফল শাস্ত্রী। ১৫০ ওয়ানডেতে ৩১০৮ রান করেন তিনি। গড়- ২৯ দশমিক ০৪। এছাড়া বল হাতে ১২৯ উইকেট নেন শাস্ত্রী। ক্রিকেট ছাড়ার পর ধারাভাষ্যকার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন শাস্ত্রী।
২০০৭ সালে গ্রেগ চ্যাপেল কোচ হিসেবে অব্যহতি দেয়ার পর অর্ন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন শাস্ত্রী। আর ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টিম ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।