ছবি: সংগৃহীত
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নির্বাচনি আইন ও বিধি সংশোধনের ক্ষেত্রে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা না করে ইচ্ছামতো নানা পরিবর্তন করছে নিবার্চন কমিশন (ইসি)। তিনি বলেছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কাজ কোনোভাবেই এককভাবে করা সম্ভব নয়। বরং সব স্টেকহোল্ডারের মতামত নিয়ে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে জোনায়েদ সাকি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনি বিধি, আইন ও প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার আগে ইসিকে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা উচিত ছিল। জাতীয় ঐকমত্যের প্রয়োজনীয়তার মুহূর্তে এ ধরনের আলোচনার গুরুত্ব আরও বেশি।’
দলের নিবন্ধন পাওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগও তোলেন সাকি। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ৩০ ডিসেম্বর নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হলেও আদালতের রায় ও সময়সীমা অতিক্রম করেও তাদের দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। সরকার পতনের আগে ৫ আগস্ট পর্যন্তও বিষয়টি ঝুলে ছিল।
তিনি বলেন, দেশে একটি ভালো নির্বাচন নিশ্চিত করতে শুধু আইনি কাঠামো নয়, বরং উপযুক্ত নির্বাচনকালীন পরিবেশ তৈরিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি নির্বাচন পরিবেশ মনিটরিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন, যা সংঘাতমুখী ঘটনার দ্রুত সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে ভালো নির্বাচন তখনই হয়েছে যখন রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে
নির্বাচন কমিশনকে প্রকৃত সাংবিধানিক মর্যাদায় দাঁড় করাতে হবে। এজন্য তিনি একটি ‘কনস্টিটিউশনাল কমিশনের মাধ্যমে’ নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে মত দেন।
বৈঠকে সাকি ছোট ও নতুন দলগুলোর প্রচার-প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি প্রতীক বড় আকারে ছাপা, জোটগত প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য আলাদা বুথ ও গণনা পদ্ধতি চালু, কেন্দ্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসংখ্যা প্রকাশসহ নির্বাচনি বিধিমালার কয়েকটি সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এছাড়া প্রচারণার ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ব্যাংক লেনদেনের পাশাপাশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্টের তথ্য জমা দেওয়ার প্রস্তাব করেন সাকি।
ফেস্টুন-পোস্টারের সংখ্যা নির্ধারণ নিয়ে তিনি বলেন, এটি বাস্তবসম্মত নয় এবং অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করে। প্রচারণায় লিফলেট ছাড়া অন্য উপকরণের ব্যবহার সীমাবদ্ধ হওয়াও ছোট দলের জন্য বাধা তৈরি করে।
সাকি আরও বলেন, প্রতিটি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে অন্তত একটি মাইকের ব্যবহার এবং পোস্টার ও বিলবোর্ড ব্যবহারের সুযোগ বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি পোস্টার লাগানোর নির্দিষ্ট জায়গা তৈরি করা হলে দলভেদে একটি সমান সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।




