ছবি: বিডি ফটো
সিরাজগঞ্জ : বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষুদ্র ঋণের গ্রহিতাদের নিকট থেকে কিস্তি আদায় আপাতত বন্ধ রাখতে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কড়া নির্দেশনা দেয়া হলেও তা মানছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।
সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় বিভিন্ন এনজিও’র কর্মীরা তাদের ঋণের কিস্তি সংগ্রহ বন্ধ করেননি।
জেলার শাহজাদপুরের কৈজুড়ীর বান্দিা ক্ষুদ্র ঋণ গৃহিতা মিজান জানান,তিনি আশা ও ব্র্যাক থেকে ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছেন। এবারের ভয়াবহ বন্যায় সর্বস্ব হারানো অসহায় মানুষগুলো তিনবেলা খাবার না জুটলেও শীর্ষ ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান দুটি গ্রহিতাকে কিস্তি দিতে অব্যাহত চাপ প্রয়োগ করছে।
এ প্রসঙ্গে ব্রাকের শাখা ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমরা আমাদের চাকরি বাঁচাতে কিস্তি সংগ্রহের কাজ করছি’।
শাহজাদপুরের থানা নির্বাহী অফিসার আলিমুল আল রাজি জানান, ‘সরকারের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১১২ টন চাল, নগদ ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে । একইসঙ্গে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি গ্রহণ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার আদেশ দেয়া হয়েছে।’
সিরাজগঞ্জ উপজেলাধীন ৯নং কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বিলোটিয়া মোর গ্রামের দিন মজুর আব্দুর রহমান জানান, মানব মুক্তি সংস্থা থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন এবং প্রতি সপ্তাহে মানব মুক্তি সংস্থার কর্মকর্তারা তার নিকট থেকে কিস্তি সংগ্রহ করছেন। স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সবুর বিয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা থানা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোঃ রায়হান জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এ পর্যন্ত ১১৫ মেঃ টন চাল ও লক্ষাধিক টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং কিস্তি গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলোকে কঠোর ভাবে নিষেধ করা হয়েছে”।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজিপুর মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে এ পর্যন্ত ১৩১ মেঃ টন চাল ও ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে এবং ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিস্তি আদায় না করতে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু তার পরেও মেছড়া, নাটুয়ারপাড়া, খাসরাজবাড়ী এলাকায় ছোট বড় বিভিন্ন এনজিও ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি প্রদানের জন্য ঋণ গ্রহিতাদের চাপ প্রয়োগ করছে।
এব্যাপারে গ্রামীণ ব্যাংকের সিরাজগঞ্জের কর্মকর্তা মোঃ রইচ উদ্দিন জানান, ‘আমাদের কর্মচারীরা ঋণ গ্রহিতাদের বাড়ী টু বাড়ী যাচ্ছে ও তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে এবং কেউ যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে কিস্তির টাকা প্রদান করে তবে তা গ্রহণ করছি। কাউকে জোর জবরদস্তি করা হচ্ছে না।’
বহুমাত্রিক.কম