গাজীপুর : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ইংরেজী প্রথম পত্রের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছে শিক্ষার্থীরা।
নিন্দা জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল করে ঘটনার বিচার দাবী করেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে শিক্ষকের অফিস কক্ষে ঢুকে স্থানীয় সেক্রেড হার্ট ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হারুন-রশিদ বাদল চেয়ার উঁচিয়ে আঘাত করে প্রধান শিক্ষক মবিনুল ইসলামকে (৬০) লাঞ্ছিত করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মবিনুল ইসলাম শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য ও অভিযোগে জানা গেছে, বৃহষ্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে অভিযুক্ত হারুন-অর-রশিদ বাদল একটি মাইক্রোবাসযোগে কমপক্ষে ৬জন যুবকসহ বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। পরে অভিযুক্ত বাদল শিক্ষকের অফিস কক্ষে ঢুকে তাকে চেয়ার দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এ ঘটনা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এ খবর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বন্ধ করে শ্রেণী কক্ষ থেকে বেরিয়ে তারা মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় অভিযুক্ত হারুন-অর-রশিদ বাদলসহ অন্যান্য যুবকেরা মাইক্রোবাসযোগে গেটের তালা ভেঙে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আবারও বিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় ঘটনার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করে।
ঘটনার শিকার প্রধান শিক্ষক মবিনুল ইসলাম জানান, অভিযুক্ত বাদলের সাথে তার ব্যক্তিগত কোন বিরোধ বা কোন যোগাযোগ নেই। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে থাকতে না পেরে অভিযুক্ত হারুন-অর-রশীদ বাদল তার ওপর হামলা করেছে বলে তিনি মনে করছেন। তাছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে তার কোনো হাত নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
অভিযুক্ত হারুন-অর-রশীদ বাদল হালকা আঘাত করেছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গত এক বছর আগে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিতে পাঁচজনের একটি প্যানেল দিয়েছিলেন। প্যানেল যথারীতি জয়ী হয়। পরবর্তীতে ওই প্রধান শিক্ষক কমিটির তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সভায় অনুপস্থিত রাখে। ফলে ওই কমিটি গঠন করা যায়নি। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। হাইকোর্ট এতে রুল দেন। পরে ওই রুলকে অমান্য করে এডহক কমিটির প্রধান শওকত মৃধাকে আবার এডহক কমিটিতে নিয়ে আসে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, কমিটি গঠন সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষককে চেয়ার উঁচিয়ে আঘাতের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শিক্ষার্থীরা ওই দিনের পরীক্ষা বর্জন করেছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনা আক্তার জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার খবর ফোনে পেয়েছি। লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। ওই শিক্ষককে থানায় অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম