ছবি : বহুমাত্রিক.কম
নওগাঁ : জেলার মান্দা উপজেলায় ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে শত শত বিঘা জমির ইরি বোরো ধান, আম, পেয়ারা, সহ বিভিন্ন ফল ও বনজ গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে ভোক্তভোগি কৃষক ও বাগান মালিকরা দাবি করেছেন।
তারা এর প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন ও মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর স্মারক লিপি ও পেশ করেছেন। তবে ইট ভাটা কর্তৃপক্ষ ভাটার কারণে ফসলের কোন হয়নি বলে জানিয়েছেন।
সরজমিনে তথ্যানুসন্ধানকালে মান্দা উপজেলার শাহাপুর গ্রামের কৃষক ও সাড়ে ৮ বিঘার ফলের বাগান মালিক হারুনুর রশিদ ওরফে দুলাল জানান, পাশের মতিন ইট ভাটা থেকে ছেড়ে দেয়া বিষাক্ত গ্যাসে তার বাগানের আম ও পেয়ারার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমের কচি পাতা জড়ো সড়ো হয়ে কালো বর্ণ ধারন করে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।
এছাড়া ছোট ছোট আম এর গায়ে কালো দাগ ধারণ করে আম গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে। একই অবস্থা কেজি পেয়ারার ও। পেয়াররার গুটি কালো বর্ণ নিয়ে গাছ থেকে ঝড়ে পড়ছে। এ ছাড়া আমার ২ বিঘা জমির ধানের পাতা কালো বর্ণ ধারন, ধানে চিটা ও শীষ মরে যাওয়ায় ধানের ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
একই গ্রামের কৃষক মোঃ ফজলুল হক জানান, ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে তার নিজের সহ গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক বিঘা জমির ইরিবোরো ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। এসব জমির ফসলের ৮০ ভাগ উৎপাদন হ্রাস পাবে বলে দাবি করেন কৃষক মোঃ ফজলুল হক।
একই ধরনের অভিযোগ এই গ্রামের কৃষক মকছেদ আলী, আব্দুস সামাদ ও ইসমাইল হোসেনের। তারা বলেন, গত বছর ও এ্কই ভাবে ক্ষতি হলেও কতৃপর্ক্ষকে জানানো সত্তেও কোন প্রতিকার মেলেনি।
অপরদিকে উপজেলার বড় বেলাল দহ মৌজায় মাঠের ভেতর থাকা মাহবুব আলম চৌধুরি, শামিম টৌধুরি ও রওনকের ইট ভাটার গ্যাসে ওই এলাকার শত শত বিঘার ইরিবোরো ধান ও নার্সারীর ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ওই এলাকার র্কষক ও নার্সারি মালিক সাদেকুল ইসলাম। তিনি এ সব ক্ষয়ক্ষতির প্রতিকার চেয়ে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট স্মারকলিপিও পেশ করেছেন।
এ ছাড়া শাহাপুর গ্রামের কৃষকরা ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিকার চেয়ে রোববার দুপুর ১২ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা কৃষি অফিসার বরাবর স্মারকলিপিও পেশ করেছেন। তবে মতিন ইট ভাটার ম্যানেজার মোঃ আব্দুস সালাম জানান, গ্যাসের কারনে নয় অন্য কোন কারণে ফসলের ক্ষতি পারে।
স্মারকলিপি পাবার কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার জাহিদুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ-সহকারী কৃষি অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত রির্পোটের ভিত্তিত্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বহুমাত্রিক.কম