
ছবি: সংগৃহীত
বাউলসম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস ছিল বৃহস্পতিবার । এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় শুক্রবার শুরু হচ্ছে তিন দিনের উৎসব। চলবে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। কুষ্টিয়া শহরতলির ছেঁউড়িয়ায় কালীগঙ্গা নদীর তীরে লালন আখড়া বাড়ি ও এর আশপাশে উৎসবের সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন আয়োজকরা।
লালনের গানের মাধ্যমে তাঁর বাণী লাখো মানুষের মাঝে পৌঁছে দেবেন লালন অনুসারী, সাধু-গুরু, বাউল ও ভক্তরা।আজ বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করবেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন।বাংলা ১২৯৭ সালের পহেলা কার্তিক (১৬ অক্টোবর) সাধক লালন সাঁই ছেঁউড়িয়ায় দেহত্যাগ করেন।
এর পর থেকে লালনের অনুসারীরা প্রতিবছর ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে নানা আয়োজনের মধ্যে দিনটি পালন করে আসছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবার জাতীয়ভাবে লালন তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।এই উৎসবে যোগ দিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আখড়া বাড়িতে ছুটে এসেছেন এবং আসছেন লালন অনুসারী, সাধু-গুরু, বাউল ও ভক্তরা। ছোট দলে ভাগ হয়ে তাঁরা গেয়ে চলেছেন লালনের গান।
এই গানের মধ্য দিয়ে ফকির লালন সাঁইয়ের বাণী লাখো মানুষের মাঝে পৌঁছে দেবেন তাঁরা। লালনের আখড়া পরিণত হবে গুরু-শিষ্যের মিলনমেলায়। অন্য বছরের তুলনায় এবার লালন তিরোধান দিবসে বাউলদের উপস্থিতি বেশি হবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা।
এদিকে লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে উৎসব অঙ্গনে চলছে গ্রামীণ মেলার প্রস্তুতি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে এসেছেন দোকানিরা। প্রতিবছরের মতো এবারও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন ভালো ব্যবসা হবে। আয়োজন সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শেষ মুহূর্তে যেন কোনো ফাঁকফোকর না থাকে তা নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লালন একাডেমির কর্মকর্তারা। এত বড় আয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। বিশেষ করে উৎসবে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পুলিশের ওয়াচ টাওয়ারসহ বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন জানান, এবার একটু বিশেষভাবে লালন তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। লালন অনুসারীরা মনে করেন, লালনের অহিংসার বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে পারলেই কেবল সার্থক হবে সব আয়োজন।