ছবি : বহুমাত্রিক.কম
ভোলা : ভারী বৃষ্টিতে রবি শস্য নষ্ট হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোলার কৃষকেরা। উপকূলে গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে অথৈ পানিতে ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত। এতে উপকূলের হাজারো কৃষকের কয়েক হাজার একর রবি শস্যের মাঠ সম্পূর্ন তলিয়ে গেছে।
এর আগে মৌসুমের প্রথম জোয়ারের পানি রবি শস্যের ক্ষেতে প্রবেশ করে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তখন কৃষক ফসলের মাঠের পানি সরানোর জন্য নিজ উদ্যোগে সেচ ও বাঁধ দিয়ে কোনমতে রক্ষা পায়। কিন্তু এবার দুই দিনের বৃষ্টির পানিতে পুরো ফসলের ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন ভেসে গেল বৃষ্টির পানিতে।
কৃষক মনির জানান, ৬০ হাজার টাকা সুদের উপর লোন এবং সার ও ওষুধ বাকিতে নিয়ে প্রায় ৫ একর জমিতে আলু, মরিচ, মুগ ও বাদামের চাষ করতেছিলাম, কিন্তু মৌসুমের প্রথম জোয়ারের পানি প্রবেশ করে আংশিক ক্ষতি হলেও এবার দুই দিনের বৃষ্টিতে পুরো ফসলের মাঠ পানিতে ডুবে সম্পূর্ন ফসল ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, রবি শস্যের ক্ষতিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন স্থানীয় সার, কীটনাশক ডিলার ও বিক্রেতারা। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঘোসের হাট বাজারের বিক্রেতা মনিরুজ্জামান মোহন জানান, কৃষকেরা মৌসুমের শুরুতে সার ও কীটনাশক বাকিতে নিয়ে যায় এবং মৌসুম শেষে ফসল বিক্রি করে তারা বাকি টাকা পরিশোধ করে।
তিনি বলেন, কৃষক ও ব্যবসার স্বার্থে অামরা অধিক হারে ব্যাংক ও মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে লোন নিয়ে থাকি, যখন কৃষকের স্বপ্ন ঝড়ে উড়ে যায়, তখন অামরা ও হতাশায় ভোগী-এই ভোবে যে কিভাবে কখন তারা অামাদের টাকা পরিশোধ করবে।
লিটন দাস নামে অারেক বিক্রেতা জানান, অালু ও তরমুজের চাষাবাদের সময় চারদিনের টানা বৃষ্টিতে পথে বসিয়ে দিয়ছে অনেক কৃষককে, অামি প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা সার ও কীটনাশক বাকি দিয়েছি, এমন পরিস্থিতিতে টাকার তলব করা তো দুরের কথা, তাদের মুখের দিকে তাকাতেও অামার কষ্ট হয়, অথচ কৃষকের সাথে অামরাও সমস্যায় ভোগী এই ব্যাপারটা কেউ বুঝতে চায়না।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টির পানিতে মুগ, বাদাম, মিষ্টি আলু, ডাল, মরিচ, তরমুজ ইত্যাদি ফসল সম্পূর্ন ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠের রবি শস্যের ফসল পানিতে ডুবে রয়েছে। পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা না থাকায় মাঠ জুড়ে শুধুই বৃষ্টির পানি।
জেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বলেন, এবার প্রাকৃতিক দূর্যোগে রবি শস্য নেই বললে চলে। যা ছিল তা বৃষ্টির পানিতে শেষ হয়ে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সাহায্য না পেলে কৃষক ঘুরে দাঁড়াতে পারবেনা।
বহুমাত্রিক.কম