ছবি: বহুমাত্রিক.কম
মুন্সীগঞ্জ : ভারি বর্ষণে উপজেলার মাওয়া মেদিনীমন্ডল প্রায় এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে আছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার নামি দামি মেদিনীমন্ডল কোরআনিয়া মাদ্রাসা ও গালর্সকলেজ (মাওয়া বাজার থেকে মাদ্রাসার ভবন পর্যন্ত) কলেজ মাঠের পেছনের রাস্তাপ্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক পানির নিচে তলিয়ে আছে মাসের পর মাস ধরে জেন কচুক্ষেতের মতো।
আবার এসব এলাকার কোনো কোনো বসত বাড়িতে প্রবেশ করেছে বৃষ্টির ও জমে থাকা ড্রেনের পানি নিন্মাাঞ্চলে বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকারে বেড়েছে। ঘরের ভেতর পানি, বেহাল রাস্তাঘাট, সংকট, লোডশেডিং সব মিলিয়ে নাকাল দশা এলাকায় বসবাসকারী মানুষের।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। ময়লা-আবর্জনায় ভরে যাওয়ায় পানি প্রবাহে বাধা তার ওপর নীচু এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, আর এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে মাওয়ার নিচু এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়।
ভারি বর্ষণের কারণে পাড়া-মহল্লার সংযোগ সড়কে হাঁটু পানি আবার নিচু এলাকার অনেক বাড়িঘরে পানি ওঠেইআছে। টানা বর্ষণ হলেই ভয়াবহ পানিবদ্ধতার কবলে আটকা পড়েন সাধারণ মানুষ। এখানকার লোকজনের জীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। কোনো কোনো স্থানে নিষ্কাষন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
মেদিনীমন্ডল এলাকায় বসবাসকারী অসংখ্য মানুষের জীবনে দেখা দিয়েছে চরম বিড়ম্বনা। খোঁজ নিয়েদেখা গেছে, মাওয়া দাশবাড়ি, ঋৃষিবাড়ি, সরদারপাড়া, বাবুরপাড়া, মাহমুদপট্টি, মিস্ত্রীপাড়া, বন্নিছাড়াসহ মেদিনীমন্ডল, নিন্মাঞ্চল প্রায় এলাকার রাস্তাাঘাট পানির নিচে তলিয়ে আছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শেখ জামান জানান, প্রতিবছর এ সময় এসব এলাকায় ভয়াবহ পানিবদ্ধতা দেখা দেয়। আগে পুকুর কিংবা খালে পানি নেমে গেলেও এখন পুকুর ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণ করার কারণে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব হয় না। দিন দিন এ সমস্যা বেড়েই চলছে। উপজেলার মেদিনী মন্ডল ৪নং ওয়ার্ড় এর নিচু রাস্তা গুলো পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসীর যাতায়াত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, সড়ক গুলোর কার্পেটিং উঠে ছোট বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগে। সড়কের ছোট বড় গর্তের পাশা পাশি কাদা মাটি এবং পানি জমে থাকায় সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছে। এসব ভোগান্তির কারণ হলো বর্ষাও ইচ্ছাগত ড্রেনেজ ব্যবহার।
ড্রেনেজ ব্যবস্তা না করায়, দ্রুত পানি নিস্কাশন ব্যবস্তাা না করা, ড্রেনে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা ও পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করে রাখা ও বাজারের পাশে খালের সংস্কার না করা সহ নানান সমস্যার ফলে।স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে জানান, এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে ভারায় বাসাবাড়ি। এছাড়া পানি নিষ্কাশনের পথ না রেখেই বাড়িঘর নির্মাণ করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়।
বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ নিজাম দেওয়ান জানান, সামান্য বৃষ্টিতে বাজারের সড়ক ঘাট তলিয়ে যাওয়ার কারণে দুর্ভোগে কষ্ট বেড়ে গেছে। প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে। মাওয়া দাশবাড়ির শ্রীকেশব লাল দাশ জানান, বর্ষাকালা এ এলাকার জন্য অভিশাপ হয়ে আসে। রান্না করা এবং টিউবওয়েল থেকে বিশুদ্ধ পানি তোলা সম্ভব হচ্ছে না এছাড়া নিষ্কাসন সমস্যা পানি নিষ্কাষনের জন্য অনেকে ড্রেন নির্মাণ না করেই বাড়িঘর তুলেছে যার ফলে বৃষ্টির পানি সরতে পারে না। এ কারণে ছোট ছোট সড়কেও পানি জমে যায়। মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
ইউনিয়ন সুত্র জানায়, এক সময় ইরি ধান চাষের জন্য মাওয়া বাজার খেলার মঠের পাষ দিয়ে ড্রেন প্রকল্প চালু করলেও নিয়মনীতি না মেনে এ প্রকল্পে ঘরবাড়ি তুলতে থাকে মানুষ। যে যেভাবে পারছে বাড়িঘর তুলছে। এছাড়া ক্যানলে শিল্প খানার বর্জ্যে ভরে যাওয়ায় পানি প্রবাহের পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে থাকে। এমনকি এ ক্যানেল দখল করে গড়ে তোলা হয় পাকা দোকান ঘর।
সরকার এর আগে পানিবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। একদিকে উচ্ছেদ চলে অন্যদিকে দখল কাজ চালিয়ে যায় দখলদাররা। ক্যানেলগুলো দখল করে গড়ে তোলে পাকা ঘর। এছাড়া পানি নিষ্কাসনের পথে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করে অনেকে। এসব দখলদারের কারণে পানি চলাচলের পথ রুদ্ধ করে থাকে।
মেদিনী মন্ডল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ হালিম জানান, এলাকার মূল সমস্যা পানিবদ্ধতা। এর স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষকালে জনদুর্ভোগসৃষ্টি হয়। আর এবারও ভারি বর্ষণে নিচু এলাকায় পানি জমে মানুষের কষ্ট বেড়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত ৩ বছরেও নিন্মাঞ্চল গুলোর কোন প্রতিকারক উন্নয়ন মোলক কাজ করা হয়নি।এ সকল নিন্মাঞ্চল গুলোরমধ্যে চলাচলরত একাধিক পয়েন্টে ১৫শ পরিবারের মানুষগুলোর বিষয়ে সরকার কী ভাবছে তাস্পষ্ট করেননি কোন কর্তৃপক্ষ। তদারকির দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ও উদ্বেগের বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি কেউ।
এ ব্যাপারে মেদিনীমন্ডল ইউঃ চেয়ারম্যন মোঃ আশরাফ হোসেন খান বলেন,নিন্মাঞ্চল গুলোর চলাচলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পরেছে মেদিনী মন্ডল গ্রাম ও বাজারের পাশে ৪নং ওয়ার্ড় এর নিচু রাস্তা এমনকি পানিরনিচে তলিয়ে রয়েছে জেকোন সময়ে বড় কোন দুর্ঘটনা পোহাতে হতেপাড়ে জন সাধারণ পথচারিদের। ইতিমধ্যে আমি সার্বিক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছি। এটি এলাকার অন্যতম একটি গ্রাম হিসাবে খ্যাতি পেয়েছে বাংলাদেশে কারণ এটা পদ্মাসেতু এলাকা। তাই সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে, অচিরেই এই সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে নিরসন ব্যবস্থা করা হবে।
বহুমাত্রিক.কম