দেশের প্রথম নারী বিচারপতির শেষ কর্মদিবস আজ

ঢাকা : সরকারি চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী দেশের প্রথম নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার আজ শেষ কর্মদিবস। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৭ জুলাই শুক্রবার শেষ হচ্ছে তার কর্মজীবন। সেদিন তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। তবে দিনটি শুক্রবার সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি থাকায় আজ বৃহস্পতিবারই হচ্ছে তার শেষ কর্মদিবস। তিনি একাধারে দেশের প্রথম নারী বিচারক হিসেবে জেলা জজ আদালতে এবং পরে বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারিক দায়িত্ব পরিচালনা করেছেন। 

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার বিদায় এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের এক নম্বর বেঞ্চে, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা জানানো হবে। এরপর বিকেলে বিচারপতিদের পক্ষ থেকেও জাজেস লাউঞ্জে তাকে সংবর্ধনা জানানো হবে।

১৯৫০ সালের ৮ জুলাই মৌলভীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তার পিতা চৌধুরী আবুল কাশেম মইনুদ্দিন। মা বেগম রাশিদা সুলতানা দ্বীন। মা ছিলেন ময়মনসিংহ রাধাসুন্দরী গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা।এ কারণে তার শৈশব কেটেছে ময়মনসিংহে। সেখানেই বেড়ে ওঠা। শিক্ষাজীবনও কেটেছে ময়মনসিংহেই।

১৯৬৫ সালে তিনি ময়মনসিংহ সদরের বিদ্যাময়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন, ১৯৬৭ সালে মুমিনুন্নেসা উইমেন্স কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বিএসসি পাস করার পর ময়মনসিংহ ল’কলেজ থেকে ১৯৭২ সালে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ওই বছরের জুলাইয়ে তিনি ময়মনসিংহ জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশায় পা রাখেন।

স্বামী কাজী নুরুল হক। দুই ছেলে সন্তানের মা তিনি। নাজমুন আরা সুলতানা ১৯৭৫ সালের ২০ ডিসেম্বর মুনসেফ হিসেবে (সহকারী জজ) নিয়োগ পান। এরপর ১৯৯০ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রথম নারী জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০০ সালের ২৮ মে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দু’বছরের মাথায় ২০০২ সালের ২৮ মে হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে প্রথম নারী বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন।

তিনি নারী বিচারকদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন জাজেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডব্লিউজেএ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার দেয়া উল্লেখ্য যোগ্য রায়গুলো মধ্যে রয়েছে- ফতোয়া বিষয়ক মামলা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সেনানিবাসের বাড়ির মামলা, চারদলীয় জোট সরকার আমলে বাদপড়া ১০ বিচারপতির মামলা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্বলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী, উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণবিষয়ক সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করার আদেশ।