ভরা মৌসুমেও রাজশাহীতে এবার আমের বাজারে যেন আগুন লেগেছে। এই বছর আমের উৎপাদন কম হওয়ার প্রচারণায় এই ভরা মৌসুমেও গত বছরের চেয়ে আমের দাম তিনগুণ।
জানা গেছেয়, গত ২০ মে থেকে রাজশাহীর বাজারে এসেছে সুস্বাদু আম। অবশ্য তার আগে গুটি আম দিয়ে বাজার শুরু হলেও সবার নজর ছিল গোপালভোগ আমের দিকে। তবে, গতবছরের তুলনায় বাজারে প্রকারভেদে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেশি আমের দাম।
এবার আমগাছে মুকুল কম হওয়ায় এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কম বলছেন আমচাষি ও বাগান মালিকরা। উৎপাদন কমের প্রচারণায় মৌসুমের শুরু থেকেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আম।
বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ে রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে গুটি ও গোপালভোগ জাতের আম উঠেছে। গোপালভোগ আম বেশিদিন বাজারে থাকে তাই বর্তমানে বাজারে গোপালভোগ প্রায় শেষ। এখন হিমসাগর বাজার মাতাচ্ছে।
রাজশাহীর সাহেবাজার কাঁচাবাজার, উপশহর নিউমার্কেট, রেলগেট, স্টেশন, শালবাগানসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে মৌসুমি আম। খুচরা বিক্রেতারা ভ্যানে করে বিক্রি করছেন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে, আবার অনেকে পাড়া মহল্লায় ফেরি করে।
পুঠিয়ার বানেশ্বর আমের হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিমণ কাঁচা গোপালভোগ আম চাষিদের কাছ থেকে আড়তগুলো কিনছে ২ হাজার ৯০০ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দামে। এছাড়া অন্যান্য আমের মধ্যে খিরসাপাত বা হিমসাগর ও ল্যাংড়া প্রতি মণ (৪০ কেজি) ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
সবচেয়ে কমদামী আম লক্ষণভোগ বা লখনা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ দামে । যার প্রতি কেজির দাম পড়ছে ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা। আর গুটি আম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে কেবল বাজারে আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া জাতের আম। প্রতি কেজি ৮০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর শালবাগান ফলের মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারে আমের বেশ চাহিদা রয়েছে। অনলাইনেও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে আম। খুচরা কিংবা পাইকারি বাজারের তুলনায় অনলাইনে প্রতিকেজি আম ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা ও বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, রাজশাহী অঞ্চলে চলতি মৌসুমে আমবাগান রয়েছে ৯০ হাজার ৮৯৮ হেক্টর। এসব জমিতে আমের উৎপাদন হবে প্রায় ৯ লাখ ৫৬০ মেট্রিকটন আম। হেক্টরে প্রায় ১০ দশমিক ৫৬ টন হিসেবে ফলন ধরা হয়েছে। প্রতিকেজি আমের দাম গড়ে ৬০ টাকা হিসেবে ৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এখন বাজারে রয়েছে গোপাল, খিরসাপাত, রানিপছন্দ ও হিমসাগর। এরপর বাজারে আসছে ফজলি, আম্রপালি, বারি-৪ ও সবশেষে আসবে আশ্বিনা জাতের আম।