
ছবি: সংগৃহীত
আলোর উৎসব হঠাৎই পরিণত হলো বিষাদে। গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত মিয়ানমারের সাগিয়াং প্রদেশে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্যারাগ্লাইডার বোমার হামলা চালিয়ে অন্তত ৩২ জন সাধারণ নাগরিককে মেরে ফেলল মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সেনা। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে। ৫০জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাবতী' জানাচ্ছে, সোমবার রাতে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সাগিয়াং প্রদেশের মধ্যাঞ্চলের চাউং উ টাউনশিপে শত শত মানুষ থাদিঙ্গুত পূর্ণিমা উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেই প্যারাগ্লাইডার হামলা চালানো হয়। জমিতে লড়াই চালানো ক্রমশ কঠিন হয়ে ওঠায় গত কয়েক মাস ধরেই জান্তা সেনা যুদ্ধবিমান ও প্যারাগ্লাইডার ব্যবহার করে আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহীদের উপর। এ বার তারা ধর্মীয় উৎসবকেও ছাড় দিল না
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেয়ার পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির গণতন্ত্রকামীরা সশস্ত্র বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বেঁধে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। স্থানীয় একজন দ্য ইরাবতীকে জানিয়েছেন, চাউং-ইউ টাউন থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বন টু গ্রামে উৎসব শুরু হওয়ার মুখেই মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার উড়ে এসে অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। অনেক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বোমাগুলো নিহতদের মৃতদেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। ফলে মৃতদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ছুটির দিন হওয়ায় অনেক তরুণ-তরুণী উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন। বোমা হামলায় মনিওয়া-অ্যামিন্ট ল্যান অহিংস কমিটির চার তরুণ সদস্যও নিহত হয়েছেন। হামলার পর মানুষের চিৎকার, কান্না এবং তাদের বন্ধু ও প্রিয়জনদের খোঁজার একটি মর্মান্তিক ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে চাউং-ইউ এবং মনিওয়া থেকে প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো প্রতি থাদিঙ্গুত উৎসবে শহরের সীমান্তে নিয়মিত মোমবাতি মিছিলের আয়োজন করছে। জান্তা উত্তর শান রাজ্যের হিসিপাও এবং নামতুতেও বোমা হামলা চালিয়েছে, যেটি তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) নিয়ন্ত্রিত ।