Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

শ্রাবণ ১১ ১৪৩১, শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪

হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে কলকাতা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩২, ২২ মে ২০২৪

প্রিন্ট:

হায়দরাবাদকে হারিয়ে আইপিএলের ফাইনালে কলকাতা

ফাইল ছবি

আসরজুড়ে রানের জোয়ার বইয়ে দেওয়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়ল প্লে অফে এসে। দুর্দান্ত এক স্পেলে তাদের টপ ও মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দিলেন মিচেল স্টার্ক। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না দলটি। ভেঙ্কাটেশ আইয়ার ও শ্রেয়াস আইয়ারের বিস্ফোরক জুটিতে অনায়াস জয়ে আইপিএলের ফাইনালে উঠল কলকাতা নাইট রাইডার্স।

আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২১ মে) প্রথম কোয়ালিফায়ারে হায়দরাবাদের বিপক্ষে কলকাতার জয় ৮ উইকেটে। জয়ের ভিত গড়া হয়ে যায় তাদের বোলিংয়েই। হায়দরাবাদকে থামিয়ে দেয় তারা ১৫৯ রানে। ৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কলকাতার সফলতম বোলার আইপিএল ইতিহাসের নিলামে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার স্টার্ক।

ভেঙ্কাটেশ ও শ্রেয়াসের ঝড়ো ফিফটিতে সহজ লক্ষ্য কলকাতা ছুঁয়ে ফেলে ৩৮ বল বাকি থাকতেই। ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ২৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন অধিনায়ক শ্রেয়াস। ২৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন ভেঙ্কাটেশ। তাদের অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯৭ রান আসে ৪৪ বলে।

এদিন টস জিতে আমদাবাদের ২২ গজে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন কামিন্স। প্রায় সব দলকে ভোগানো ট্রেভিস হেড-অভিষেক শর্মার ওপেনিং জুটি কোয়ালিফায়ারে ব্যর্থ হল। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই হেডের (শূন্য) স্টাম্প ছিটকে দেন স্টার্ক। দ্বিতীয় ওভারে অভিষেককে (৩) আউট করেন বৈভব অরোরা। ১৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। 

স্টার্ক প্রতিপক্ষকে আরও কোণঠাসা করে দিলেন নিজের তৃতীয় ওভারে। শেষ দু’বলে পর পর আউট করলেন নীতীশ কুমার রেড্ডি (৯) এবং শাহবাজ় আহমেদকে (শূন্য)। স্টার্ক অবশ্য হ্যাটট্রিক পেলেন না। ১৯তম ওভারে তাঁর হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা নষ্ট করে দেন কামিন্স। হায়দরাবাদের ব্যাটারদের দেখে প্রথম থেকেই বোঝা যাচ্ছিল চাপে রয়েছেন। খুচরো রান নেওয়ার ক্ষেত্রেও ঠিক মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না তাঁরা।

৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর হায়দরাবাদকে লড়াইয়ে ফেরান তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠী এবং ছ’নম্বরে নামা হেনরিখ ক্লাসেন। পঞ্চম উইকেটে জুটিতে আগ্রাসী মেজাজে তাঁরা তুললেন ৬২ রান। পাল্টা আক্রমণের জন্য হায়দরাবাদের দুই ব্যাটার মূলত বেছে নিয়েছিলেন সুনীল নারাইনকে। বিশেষ করে ক্লাসেনকে আটকাতে পারছিলেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের অলরাউন্ডার। এসময় শ্রেয়াসের এক চালে সাজঘরে আবার লড়াইয়ে ফেরে কেকেআর। আক্রমণে আনেন বরুণ চক্রবর্তীকে। তার বলে ঠকে যান ক্লাসেন (২১ বলে ৩২)। জুটি ভাঙার পর নিজের ভুলে আউট হলেন রাহুলও।

৩৫ বলে ৭টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫৫ রান করে আউট হন তিনি। নিজের ভুলে আউট হয়ে হতাশ রাহুল সাজঘরে ফেরার সিঁড়িতে মাথা নীচু করে বসেছিলেন বেশ কিছু ক্ষণ। তার সেই বসে থাকার ছবি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। এর পর আর হায়দরাবাদ তেমন রান তুলতে পারেনি। আবদুল সামাদ করেন ১২ বলে ১৬। শেষ দিকে ২টি করে চার এবং ছয়ের সাহায্যে কামিন্সের ২৪ বলে ৩০ রানের ইনিংস হায়দরাবাদকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেয়। ৩ বল বাকি থাকতে ১৫৯ রানে শেষ হয় কামিন্সদের ইনিংস।

এদিন কেকেআরের সব বোলার উইকেট পেলেন। সফলতম স্টার্ক ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ২৬ রানে ২ উইকেট বরুণের। ১৫ রানে ১ উইকেট রাসেলের। ১৭ রানে ১ উইকেট বৈভবের। ২৭ রানে ১ উইকেট নিলেন হর্ষিত রানা। নারাইনের ১ উইকেট এল ৪০ রান খরচ করে।

রান তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালো করেন কলকাতার দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সুনীল নারিন। চতুর্থ ওভারে তাদের ২০ বলে ৪৪ রানের জুটি ভেঙে দেন নাটারাজান। গুরবাজ বিদায় নেন ১৪ বলে ২৩ করে। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নারিনও। তার ব্যাট থেকে আসে ২১ রান।  

এরপর তৃতীয় উইকেটে ৪৪ বলে ৯৭ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ভেঙ্কাটেশ আইয়ার ও শ্রেয়াস আইয়ার। দুজনেই পান ফিফটির দেখা। ২৮ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ভেঙ্কাটেশ অপরাজিত থাকেন ৫১ রানে। আর ২৩ বলে ফিফটি ছুঁয়ে শ্রেয়াস অপরাজিত থাকেন ৫৮ রানে।

এই ম্যাচে হারলেও আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়নি হায়দারাবাদের। বুধবার এলিমিনেটর ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যকার জয়ী দলের প্রতিপক্ষ হিসেবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে তারা। সেখান থেকে জয়ী দল ফাইনালে মোকাবিলা করবে কলকাতাকে। 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer