বগুড়া : বগুড়ার আলোচিত ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারী বহিষ্কৃত শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকার ও তার মেজ ভাই বহিষ্কৃত শহর যুবলীগ নেতা মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (এডি) আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের এই কর্মকর্তা জানান, তুফান সরকার, মতিন সরকার এবং তাদের পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানের জন্য গত ২ আগস্ট প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি লেখা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গত ২১ সেপ্টেম্বর শুধু তুফান সরকার ও তার ভাই মতিন সরকারের সম্পদের অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। নির্দেশমত আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
তিনি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তিনি তদন্ত শুরু করেছেন। প্রথমে তুফান ও মতিনের কাছে চিঠি দিয়ে তাদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব চাওয়া হবে। তারা হিসাব জমা দিলে তদন্ত পাওয়া তথ্যের সঙ্গে মেলানো হবে। এতে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সূত্র জানায়, তুফান ও মতিন সরকারের বাবা মজিবর রহমান আগে বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর চামড়া গুদাম এলাকায় রিকশা চালাতেন। তার সাত ছেলের প্রায় সবাই মাদক ব্যবসা, দখল, চাঁদাবাজি, জুয়াসহ নানা অপরাধে জড়িত। তার ছেলে তুফান সরকার মাদক ব্যবসা, রেলের জায়গা দখল করে বিক্রি, জুয়া, দখলবাজি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে মাত্র কয়েক বছরে কোটিপতি হয়ে যান। তার বগুড়া ও ঢাকায় একাধিক বাসা-ফ্ল্যাট রয়েছে। শহরে চকযাদু সড়কে কোটি টাকা ব্যয়ে স্যানেটারি স্টোর করেন। শোনা যায়, চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করেছেন। একাধিক গাড়িতে চলাফেরা করেন। কিছুদিন আগে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক প্রাইভেটকার কিনেছেন।
দুদক সূত্র আরও জানায়, তার (মজিবর) মেজ ছেলে মতিন সরকারও জুয়া, দখল, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, মাদক বিক্রিসহ বিভিন্নভাবে কোটিপতি হন। মতিন সরকার শহরের চকসুত্রাপুর এলাকায় আবু নাসের উজ্জ্বল নামে এক যুবকসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি। গ্রেফতার হলেও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আর হাজিরা দেননি। পুলিশ ও আদালতের খাতায় মতিন গত ৮ বছর ধরে ‘পলাতক’। তিনি প্রকাশ্যে মন্ত্রী, এমপি, ডিসি, এসপিসহ অনেকের সঙ্গে বৈঠক এবং প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও ২০১২ সালের ২৫ জুন তাকে ‘পলাতক’ দেখিয়ে তার পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ করা হয়। মতিন সরকার প্রকাশ্যে থাকলেও গত ৫ বছর সরকারি খরচে তার পক্ষে মামলা চলছে স্টেটডিফেন্স দিয়ে।
বহুমাত্রিক.কম