
ড. জয়ন্ত চৌধুরী-ছবি: বহুমাত্রিক.কম
দাবিদার পরিবারদের পারিবারিক সম্পত্তি আজও প্রকৃত অর্থে জাতির সম্পত্তি হয়ে উঠল না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে কুক্ষিগত করতে গিয়ে ঐতিহ্যময় এই ভবনটিকে শুধু মাত্র (নেহেরু- শিশির -সুগত- কৃষ্ণা বসুদের ছবি সহ) প্রবেশ দ্বারে ভারী বিজ্ঞাপনের হোডিং লাগিয়ে কাঠামোগত ক্ষতি নয়, পূর্বের ভবনেও পরিবর্তন এনেছেন। নেতাজি ভবন সংলগ্ন পিছনের খোলা মাঠটিতে একদা প্রস্তাবিত গবেষণা কেন্দ্রের পরিবর্তে একটি প্যাভিলিয়ন মঞ্চ গড়ে তোলা হয়েছে।
দোতলার ডানদিকের ঘরটি ছিল নেতাজির প্রকৃত বাসকক্ষ। যেখান থেকে উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিম দিকে জানলা দিয়ে নজরদারি করা যেত অনায়াসে। বর্তমানে এই ঘরটিকে বলা হচ্ছে মেজদা শরৎচন্দ্র বসুর কক্ষ। মিথ্যা গাড়ি, মিথ্যা ছবি ও মহাজাল চিঠির মতোই নেতাজির মায়ের ঘরটিকে থেকে বলা হয় নেতাজির বাস কক্ষ।
নিচের ছবিতে ডানদিকে যে বহুতলটি দেখা যাচ্ছে সেটির ঠিকানা ছিল ৩৮/১এলগিন রোড। আগের বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। অ্যাডভোকেট মিস্টার সরকারের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন শরৎ বসু সপরিবারে এই বাড়িতেই। নেতাজির ভাইঝি ললিতা বসুর সঙ্গে একদা হাতে টানা রিকশায় চড়ে এই বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় আমাকে বলেছিলেন তার রাঙা কাকাবাবু সুভাষচন্দ্র প্রথম গ্রেপ্তার হয়েছিলেন এই পাশের হলুদ রঙের বাড়িতেই (৩৮/১ এলগিন রোড)। এর পর বাড়িটি ৯০ দশকেই ভেঙে ফেলা হয়েছিল ।
এই ভাড়া বাড়ি ছেড়ে শরৎচন্দ্র বসু তার নবনির্মিত ১নংউডবার্ন পার্কের বাড়িতে চলে যান। আমৃত্যু সেখানেই ছিলেন। ৩৮/২ এলগিন রোডের বাড়িতে সপরিবারে কোনদিন বসবাস করেননি। প্রতিদিন বহু মানুষ নেতাজিভবনে মিউজিয়াম দেখতে আসেন। অনেকগুলি ভুল জিনিসের মধ্যে এই মিথ্যাটিও তারা দেখতে বাধ্য হন। নেতাজি ভবনকে জাতীয় মিউজিয়াম গড়ে তোলা হোক। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এর সাহায্যপুষ্ট এই পবিত্র ভবনটি পারিবারিক নয়, প্রকৃত অর্থে জাতীয় সম্পত্তি হয়ে উঠুক। উল্লেখ্য,গান্ধী, নেহেরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী প্রমুখের বাসগৃহ আজ জাতীয় সম্পদ, কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তি । জয় হিন্দ
ড. জয়ন্ত চৌধুরী: নেতাজী বিশেষজ্ঞ