যশোর : করোনা ভাইরাসে যখন যশোর শহরের বিভিন্ন এলাকা লক ডাউনের আওতায় আসলেও মাদক ব্যবসায়ীরা লকডাউন মানছেন না। তারা তাদের কারবার অদম্য গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের আড়ালে হোমিও প্যাথিক দোকানের আড়ালে রেকটিফাইট স্পিরিট ও ডিনোচার্জ এমনকি চোলাই মদের ছড়াছড়ি হচ্ছে।
যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যশোর জেলা কার্যালয়ের ক সার্কেলের কতিপয় সদস্যদের সাথে সখ্যতা রেখে রেকটিফাইট স্পিরিট, ডিনোচার্ড ও গাঁজা বিক্রেতা তাদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছেন। এখানে মাদকের ছড়াছড়ি দেখলে মনে হয়না মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ বলে এ জেলা শহরে কোন দপ্তর আছে কিনা। মাদকদ্রব্য বিভাগের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, দিন দিন যশোর জেলা শহরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মাদক কারবারীরা তাদের কারবার চালাচ্ছে অদম্য গতিতে। যশোর শহরের রেলগেট, খোলাডাঙ্গা, খড়কী, আরবপুর, পালবাড়ী, পুরাতন কসবা, ষষ্টিতলা, বেজপাড়া, ঘোপ, কারবালা, পোস্ট অফিস পাড়া, শংকরপুর, বড় বাজার, মুড়োলী, রাজারহাট, বড় বাজার এলাকায় বসবাসকারী মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা মাদকদ্রব্য বিভাগের হাতে রয়েছে। তারা লক ডাউন উপেক্ষা করে তালিকা ধরে মাদকদ্রব্য বেচাকেনাকারী ব্যক্তিকে সনাক্ত করে তাদেরকে আটকের ভয়ভীতি দেখিয়ে মাদকদ্রব্য বিভাগের সিপাহী মিজানুর রহমান মাসিক চুক্তি করার কাজে নিয়োজিত হয়েছৈন বলে নির্ভরযোগ্য সুত্রগুলো দাবি করেছেন।
সূত্রগুলো আরো জানান, সিপাহী মিজানুর রহমান যশোর শহরের বড় বাজার এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন হার্ডওয়ার দোকানের মালিকদের কাছে নিজেকে মাদকদ্রব্য বিভাগের কথিত ক্যাশিয়ার (আদায়কারী) হিসেবে দাবি করে পরিচিত হয়েছেন। যশোর বড় বাজার ও শহর এবং শহরতলী বিভিন্ন হার্ডওয়ার দোকানগুলিতে সিপাহী মিজানুর রহমান অফিসিয়ালের বাইরে একাই গিয়ে পরিচিতি লাভ করছেন।
সূত্রগুলো বলেছেন,হার্ডওয়ার দোকান গুলির মালিকদের মধ্যে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, সিপাহী মিজানুর রহমান তাদেরকে কাছে ডিনোচার্ড বিক্রির ফরমায়েশ দাবি করে টাকা নেওয়ার কৌশল নিয়েছে। যশোর শহরের বড় বাজার এলাকার কালাম হার্ডওয়ার দোকান ছাড়াও অনেক বড় বড় দোকান রয়েছে। যে দোকান গুলিতে সিপাহী মিজানুর রহমান গিয়ে পরিচিতি লাভ করছেন। তিনি মাদকদ্রব্য বিভাগের নতুন ক্যাশিয়ার আদায়কারী হিসেবে দাবি করছেন। সিপাহী মিজানুর রহমানের কথা মতো যারা রাজি হবেন না। তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালানোর হুমকিধমকি দিচ্ছে। সিপাহী মিজানুর রহমানের কারণে যশোর শহর ও শহরতলী এলাকায় গড়ে ওঠা হার্ডওয়ার দোকানগুলিতে অবৈধবাবে ডিনোচার্ড স্পিরিট বিক্রি হচ্ছে।
সূত্রগুলো আরো দাবি করেছেন, হোমিও ফার্মেসির আড়ালে কতিপয় ব্যবসায়ীরা রেকটিফাইড স্পিরিট (আরএস) বিক্রি করে বিভিন্ন মানুষের জীবনের হুমকীর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যশোর শহরের চৌরাস্তার অদূরে কয়েকটি হোমিও দোকান রয়েছে। যে দোকানগুলির মালিকেরা সম্পূর্ন অবৈধভাবে রেকটিফাইড স্পিরিট বিক্রি করছে মদ সেবনকারী যুবকদের কাছে। নিয়ম ছাড়াই ওই স্পিরিট বিক্রির কারণে সম্প্রতি যশোর এলাকায় ১০ জনের অধিক যুবকের প্রাণ ঝরে গেছে। অবৈধ কারবারিরা রেকটিফাইড স্পিরিট ব্যবসায়ীদের হোমিও ব্যবসার আড়ালে স্পিরিট ক্রয় করে চোলাইমদের সাথে মিশিয়ে ও নেশা জাতীয় ট্যাবলেট মিশিয়ে মদ সেবনকারীদের কাছে বিক্রি করছে। যা পান করে অকালে মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে সেবনকারী যুবকেরা।
সূত্রগুলো বলেছে, হোমিও ব্যবসার আড়ালে রেকটিফাইড স্পিরিট ব্যবসায়ীদের সাথে মাদকদ্রব্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও সিপাহী মিজানুর রহমানের সখ্যতা থাকায় সব সময় তারা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। শহরের চৌরাস্তার অদূরে কয়েকটি দোকানে হোমিও প্যাথিক ঔষধ বিক্রির আড়ালে স্পিরিট ব্যবসা এখন জম জমাট হয়ে উঠেছে। আর এই ব্যবসা চলছে মাদকদ্রব্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা ও সিপাহী মিজানুর রহমানের সখ্যতার কারণে। এ ব্যাপারে সিপাহী মিজানুর রহমানের কাছে সাংবাদিকরা অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
বহুমাত্রিক.কম