
ফাইল ছবি
দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্কের প্রেক্ষিতে চাচাতো বোনের সঙ্গে গোপনে করেছিলেন বিয়ে করেন ওমর ফারুক সৌরভ। এ বিয়ে সৌরভের পরিবার মেনে নিলেও, মানতে পারেননি মেয়ের পরিবার। সেই ক্ষোভেই সৌরভকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সুতিয়া নদীর ব্রিজের নিচে লাগেজে খণ্ডিত দেহ ও তার পাশ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধারের পর রোববার (২ জুন) বিকেলে মেলে পরিচয়। খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসেন পরিবারের সদস্য ও সৌরভের বন্ধুরা। হত্যার ঘটনায় রাতেই হয়েছে মামলা।
স্বজনরা জানান, প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওমর ফারুক সৌরভ ও তার চাচাতো বোন ইসরাত জাহান ইভার। গত ১২ মে ঢাকায় যান ইভা। পরে সৌরভের এক বন্ধুর বাসায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন সৌরভ-ইভা। এরপর নিজের বাসাতেও নিয়ে গিয়েছিলেন সৌরভ। ওইদিনই ইভা চলে আসেন ময়মনসিংহে। দুই দিন পর ময়মনসিংহে এসে চাচা-চাচিকে বুঝানোর চেষ্টা করেন সৌরভ। কিন্তু না মেনে উল্টো তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
সৌরভের মা পারুল আক্তার আহাজারি করে বলছেন, ‘ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন মাটি চাপা দিয়েছে খুনিরা। এখন সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের সবার ফাঁসি চাই।’
তিনি জানান, ‘কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সৌরভ মতিঝিলের বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বাসায় না ফেরায় ছেলের মুঠোফোনে খোঁজ নেন; তবে ফোন বন্ধ পান। বিষয়টি তার মেয়েকে জানান। মেয়ে তাকে জানায় সৌরভের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। সে বাসায় ফিরবে বলে জানিয়েছে। এর পর থেকে ছেলের মুঠোফোন বন্ধ ছিল।’
পারুল আক্তার জানান, ‘বিয়ের খবর জানার পর থেকে তার দেবর ইলিয়াস প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার স্বামীর মুঠোফোনে ফোন করে ওমর ফারুককে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। সেই হুমকির রেকর্ডও তাদের কাছে রয়েছে। ওই বিষয়ে ওমর ফারুক রাজধানীর মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানকার পুলিশ ঈশ্বরগঞ্জ থানায় গিয়ে জিডি করতে বলেছিল।’
এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ওসি মাইন উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ আলীর ছেলে ওমর ফারুক সৌরভ। সপরিবারে ঢাকায় থাকতেন তারা। সৌরভ ঢাকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পরিবার।