
ছবি- সংগৃহীত
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় ঢাকার রাশিয়ান হাউস স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে "চট্টগ্রাম বন্দরে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাশিয়ার অবদান" শীর্ষক দুই দিনব্যাপী (২ ও ৩ অক্টোবর, ২০২৩) 'রাশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেন্তিয়েভিচ মানতিতস্কি।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে ঢাকায় রাশিয়ান হাউস এবং স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে এই উৎসব আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের সার্বিক পুনর্গঠনে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার কথা স্মরণ করে বলেন, রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দীর্ঘ ও পুরনো। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষ একে অপরকে জানতে পারে। সেই ধারা অব্যাহত রাখতেই এই চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন। দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে রাশিয়া সব সময় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকায় রাশিয়ান হাউসের পরিচালক পাভেল দভয়চেনকভ তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন যে আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে ঢাকায় রাশিয়ান হাউসের সংরক্ষিত মোট ৫০ টি দুর্লভ ঐতিহাসিক ছবি রয়েছে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা যা তার প্রমাণ।
চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত প্রামাণ্যচিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, এসব চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকরা রাশিয়ার কিছু অঞ্চলের জীবনধারা, সংস্কৃতি এবং সমসাময়িক বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং সেই সঙ্গে রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা ও শিক্ষার সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
উৎসব চলাকালীন প্রদর্শিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে গ্রিগরি চুখরে পরিচালিত ক্লাসিক ১৯৫৯ সালের ফিচার ফিল্ম সোভিয়েত ফিল্ম "ব্যালাড অফ এ সোলজার"; রাশিয়ান লেখক মিখাইল বুগাকভের লেখা উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে ভ্লাদিমির বোর্টকো পরিচালিত বিজ্ঞান-কল্পকাহিনী মুভি "হার্ট অফ এ ডগ" এবং বোরিস দুরভ পরিচালিত অ্যাকশন মুভি "পাইরেটস অফ দ্য ХХ সেঞ্চুরি"।
তিনি ঢাকায় রাশিয়ান হাউস কর্তৃক আয়োজিত রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা বৃত্তির সুযোগ বিষয়ক নিয়মিত সেমিনারেও আমন্ত্রণ জানান। পরবর্তী সেমিনারটি ৯ অক্টোবর, ২০৩ বিকাল ৪ টায় অনুষ্ঠিত হবে। রাশিয়ান হাউস, ধানমন্ডিতে। পাশাপাশি আগামী বছরের মার্চের শুরুতে সোচিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব যুব উৎসব-২০২৪-এ অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশি বন্ধুদের নিবন্ধন করার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২০,০০০ এরও বেশি রাশিয়ান এবং বিদেশী তরুণ নেতারা - ব্যবসা, মিডিয়া, শিক্ষা, বিজ্ঞান, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, সংস্কৃতি, স্বেচ্ছাসেবী, ক্রীড়া এবং সামাজিক জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রের পেশাদাররা - এই উত্সবে জড়ো হবে।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়া এই দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আশা করেন, সম্পর্ক আরও মজবুত হবে, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশের মানুষ একে অপরকে আরও ভালোভাবে জানতে পারবে।
অন্যান্য বক্তারা বাংলাদেশের পুনর্গঠনে এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়ার অসামান্য সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান এই অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসকে ধন্যবাদ জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উৎসবে আগত দর্শকরা চলচ্চিত্র প্রদর্শনসহ সকল অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।