Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

বরগুনায় ধারাবাহিক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ চলছে

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ২০ এপ্রিল ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

বরগুনায় ধারাবাহিক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ চলছে

ঢাকা : সূর্যমুখী চাষে কোন ঝুঁকি নেই। ভোজ্য তেল ও সব ধরণের সবজির সঙ্গে খাওয়া যায়। পুষ্টিমান অনেক বেশি। কোলেস্টেরলমুক্ত তেল। বরগুনা অঞ্চলের কৃষকের কাছে লাভজনক কৃষি ফসল হিসেবে সূর্যমুখী চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

আমতলী উপজেলার পূর্বচিলা গ্রামে আউশ ও আমন ধানের চাষ ছাড়া কৃষকরা কোন অর্থকরী ফসল ফলানোর চিন্তা মাথায় নেয়নি। কৃষকের কাছে বিকল্প কোন চাষযোগ্য ফসলও ছিল না। কয়েক বছর আগে উন্নয়ন সংস্থা ব্রাক তাদের বিকল্প হিসেবে সূর্যমুখী চাষ করার সুযোগ তৈরি করে দেয়। এ সূর্যমুখী চাষের সুবাদে দুই ফসলি জমি তিন ফসলিতে পরিণত হয়েছে।

গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় বরগুনা জেলায় এ মৌসুমে ১৫৩২ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখীর চাষ করেছেন জেলার প্রায় ৩ হাজার কৃষক। এর মধ্যে আমতলী উপজেলাতেই ৭ শ ৩০ হেক্টর চাষের আওতায় এসেছে। কম পরিশ্রম ও কম অর্থ বিনিয়োগ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। সূর্যমুখী চাষ কৃষি অর্থনীতিতে সমৃদ্ধির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে কৃষক ও কৃষিবিদরা জানিয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উন্নয়ন সংস্থা ব্রাকের পরামর্শ ও সহযোগিতায় সূর্যমুখী চাষ এ অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়েছে। কৃষক ও কৃষিবিদেরা জানিয়েছেন, সূর্যমুখীর চারা রোপণের ১১৫ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়। মূলত প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সূর্যমুখীর চাষ করা হচ্ছে। সূর্যমুখী ফুলের দানা থেকে ভোজ্যতেল উৎপাদন করা হয়। এছাড়া সর্ষে বাটার মতো করে সূর্যমুখী ফুলের দানা খাওয়া যায়। সূর্যমুখী গ্রামের মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছে।

এক একর জমিতে সূর্যমুখী চাষে খরচ পড়ে প্রায় ১২ হাজার টাকা। একরে সূর্যমুখী উৎপাদন হয় ৩৩-৩৫ মণ। একমণ সূর্যমুখী ফুলের বীজের বাজার মূল্য প্রায় ১৩-১৪ শ টাকা। একর প্রতি উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের প্রায় কমবেশি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ সংগ্রহ করার পর বিশাল বিশাল গাছগুলো জমিতে পচিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে জমির জৈবসারের ঘাটতি পূরণ হয়। অনেক কৃষক পরিবার তার দৈনন্দিন জীবনে রান্নার কাজের জ্বালানি হিসেবে সূর্যমুখীর খড়ি ব্যবহার করে থাকে। এতে করে জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পাচ্ছে।
জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা বদরুল হোসেন জানান, নতুন লাভজনক ফসল চাষে কৃষককে প্রেরণা যোগাতে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে দু’ফসলি জমিতে কীভাবে বছরে ৩টি অর্থকরী কৃষি ফসল খাদ্য শষ্য চাষ করা যায় তা নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সফলতাও এসেছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহী নূর আজম খান জানান, সূর্যমুখী চাষে কৃষক পরিবারগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। সূর্যমুখী চাষ গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। কৃষক পরিবারগুলো ফুলচাষে লাভের মুখ দেখায় সূর্যমুখী ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছে। সূর্যমুখী চাষ অর্থনৈতিকভাবে খুবই লাভজনক।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer