বগুড়া : ‘উত্তরে যা দক্ষিণে যা, আকাশে যা মাটির নীচে যা ডানে যা বামে যা। হু.রেরর.....। অতল সাগরে যা নাগ রাজ্যে যা পরীর দেশে যা। হু রেররর...। অলৌকিক শক্তির দেশে যা...যা...যা..। সকল বিপদ আছান কর, যা..যা...যা...। হুম... আয়...। তোর মনের বাসনা পুর্ণ হবে, তুই সোনার পুতুল পাবি, কলস পাবি, হুম...। ধৈর্য্য ধর.....। যদি তুই জ্বীনের বাদশার কথা শুনিস তাহলে পাবি। সকল বিপদ দুর হবে..। তা না হলে জীবন ভর কাঁদবি।’
এমনই নানা ধরণের বাক্য উচ্চারণ ও কলাকৌশল করে অঢেল সম্পদের মালিক বানানো এবং বিভিন্ন সমস্য দুর করার প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দিয়ে গ্রামের সহজ সরল লোকের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে বগুড়ার শাজাহানপুরে সাড়ে ‘৩ লক্ষাধিক জ্বীনের বাদশা’ নামে খ্যাত ভন্ড প্রতারক উপজেলার দাাড়িগাছা গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে রাজেক আলীকে গ্রেপ্তার এবং পরে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, প্রতারক এই জ্বীনের বাদশা শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক ইউপি সদস্য।
শাজাহানপুর থানার এসআই কালাচান ঘোষ জানান, বগুড়া গাবতলী উপজেলার শারমীন নামে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর বৃদ্ধা মায়ের অসুস্থতা জ্বীনের মাধ্যমে দুর করার কথা বলে তার নিকট থেকে কয়েক দিনে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব অভিযোগ এনে শারমীন তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে রোববার ১৬ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এবিষয়ে আরও জানাযায়, শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল এলাকার রেবেকা নামের এক নারীর একে একে ৩টি সন্তান মারা গেলে ঐ জ্বীনের বাদশা তার বাড়ীতে হাজির হন। এরপর অসীম শক্তি ও জ্বীনের মাধ্যমে তার জীবনের অশনী দোষ দুর করা এবং সন্তান জীবিত থাকবে, এমন কথা বলে কয়েক মাসে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
মানিদীপা গ্রামের মৃত আবদুর রহমানের ছেলে নুরুল ইসলাম (৭০) জানান, তার পিতাকে অঢেল সম্পদ ও অলৌকিক সোনার কলস দেয়ার কথা ও বিভিন্ন প্রতারণার রসাত্বক কথা বলে। তার পিতাএসব বিশ্বাস করে প্রায় ১০ বছর পুর্বে তাদের একমাত্র দেড় বিঘা জমি বিক্রি করে দেড় লক্ষাধিক টাকা ঐ জ্বীনের বাদশাকে প্রদান করে। এতে করে তারা একে বারে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এভাবে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণার জাল পেতে অনেক লোকজনের নিকট থেকে সে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
তার সম্পর্কে লোকজন আরও জানান, টাকাগুলো সে বিভিন্ন ফন্দিতে নিতো। ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে গভীর জঙ্গলে, শ্বশ্মানে, কালীঘরে, নিঝুম বড় কোন বৃক্ষের নীচে, নদীপাড়ে, লোকচক্ষুর অন্তরালে চলমান পথের মাটির নীচে টাকা রেখে আসতে বলতো। আর টাকাগুলো আনার জন্য জ্বীনের বাদশার একান্ত কয়েকজন লোক ছিল। তারা গিয়ে গোপন সময়ে টাকাগুলো নিয়ে আসতো।
বহুমাত্রিক.কম