চিরাচরিত প্রথা ভেঙে উপনয়ন অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণ সন্তানের ‘ভিক্ষা মা ও ভিক্ষা বাবা’ হয়ে ধর্মীয় গোঁড়ামিকে নস্যাৎ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বীরভূমের রামপুরহাটের আবদুর রেকিব ও অভিজিৎ মজুমদারের পরিবার। খবর আজকাল`র
সম্প্রতি রামপুরহাট সারদাপল্লীর বাসিন্দা অভিজিৎ মজুমদারের একমাত্র পুত্র অর্ণবের উপনয়ন অনুষ্ঠান হয় তাঁদের বাসভবনে। ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী উপনয়নের পর তিনদিন সূর্যের মুখ না দেখে থাকার পর প্রথম সূর্যদর্শনের দিনে নিজের মা–বাবার কাছে অন্ন গ্রহণ করা যায় না। তখন প্রথম যে দম্পতি ব্রহ্মচারীকে অন্ন দেন, তাঁদেরই বলা হয় ভিক্ষা মা ও ভিক্ষা বাবা। রবিবার ভোরে প্রথম সূর্যের মুখ দেখেই আবদুর রেকিব ও ওয়াহিদা রহমানের কাছে ‘ভিক্ষাং দেহি’ বলে প্রথম অন্নভিক্ষা গ্রহণ করে সদ্য ব্রাহ্মণ অর্ণব। প্রচলিত অর্থে এই অনুষ্ঠানটিকেই বলা হয় ‘মুখ দেখা’র অনুষ্ঠান।
অভিজিৎবাবু বলেন, ‘রেকিব আমার দীর্ঘদিনের শুভাকাঙ্ক্ষী। বছর পাঁচেক আগে আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে যান। তখন অর্ণবের বয়স মাত্র বছর পাঁচেক। তখন থেকেই রেকিব ও তাঁর স্ত্রী ওয়াহিদা অর্ণবকে তাঁদের নিজের সন্তানের মতোই স্নেহ করে আসছেন। তাই রেকিব ও ওয়াহিদাকেই আমার পুত্র অর্ণবের ‘মুখ দেখা’র প্রস্তাব প্রথমে আমিই দিয়েছিলাম। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন সস্ত্রীক রেকিব। আমার মা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা সত্তরোর্ধ্ব কল্যাণীদেবীও এ ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেন।’
আর রেকিব ও ওয়াহিদা বলেন, ‘অর্ণবকে ছোট থেকে আমরা নিজেদের সন্তানের মতো ভালবেসে এসেছি। তার ভিক্ষা মা ও বাবা হতে পেরে আমরা খুব খুশি।’ রবিবার ভিক্ষা ছেলেকে নিয়ে তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে নিয়ে যান রেকিব ও ওয়াহিদা।