Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১২ ১৪৩১, শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘কসমিক সেক্স’-এ সাবালক হচ্ছে টালিউড!

নাজমুল হক ইমন

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

আপডেট: ১০:৪৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

প্রিন্ট:

‘কসমিক সেক্স’-এ সাবালক হচ্ছে টালিউড!

ঢাকা: ‘টালিউড নাকি সাবালকত্ব পেল। কারণ ‘কসমিক সেক্স’ সিনেমাটির মাধ্যমেই নাকি সাবালক হবে কলকাতার বাংলা সিনেমা’ এমনটিই জানালেন সিনেমাটির পরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তী।

সঙ্গম দৃশ্য, উত্তেজক দৃশ্য কিংবা অশ্লীল দৃশ্যে ভরপুর আর এই প্রসঙ্গে পরিচালকের ব্যাখ্যা, ‘কাহিনীর স্বার্থেই খুবই প্রাসঙ্গিক এই দৃশ্যগুলো।’

আবারো ঋ সেন, আবারো আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্কের ঝড় এবং নিষিদ্ধ সিনেমা। তবে এবারের মোড়টা একটু বিভিন্ন সিনেমা হলে মুক্তির জন্য আর কোনো অপেক্ষা নয়। ঋ সেনের ভক্তরা তার নতুন সিনেমাটি দেখতে পাবেন অনলাইনে। ঘরে বসে দেখতে এবার অনলাইনে মুক্তি দেয়া হচ্ছে ‘কসমিক সেক্স’।

‘কসমিক সেক্স’ কাহিনীতে দেখা যাবে এক রাতে আঠারো বছর বয়সী কৃপার সঙ্গে তার বাবার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। কারণ ছিল তার বিমাতাকে নিয়ে। সেখানে একটি দুর্ঘটনা ঘটে এবং তার বাবা মারা যায়; কৃপা তার বাবাকে হত্যা করে। এরপর ভয়ে সে বাড়ি থেকে দূরে পালাতে চেষ্টা করে। সে রাতে রাস্তায় বিভিন্ন বিপরীতমুখী চরিত্রের সন্ধান পায় কৃপা।

একপর্যায়ে তার পরিচয় ঘটে দেবী নামের একজন রাস্তার পথিকের সঙ্গে। জোনাকি নামে দেবীর একজন হিজড়া দালাল ছিল। এরপর কৃপা দেবীর প্রতি প্রেম, যৌনতা এবং ঈর্ষার ফাঁদে পড়ে। সে আবার খুন করে। জোনাকি মারা যায়। কৃপা আবার পালিয়ে বেড়াতে থাকে।

এক ভোর কৃপা গঙ্গার তীরে বসে ছিল। এ সময়ে জল থেকে একজন নারীর উত্থান ঘটে। কৃপা দেখতে পায় তার মৃত মা জীবিত অবস্থায় ফিরে এসেছে! তাই সে তার মাকে অনুসরণ করে। তিনি কৃপাকে তার ঘরে নিয়ে আসেন এবং পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। একটি নতুন জীবন এবং অন্যরকম জন্ম দেন। তিনি কৃপাকে তার যৌনশক্তি ব্যবহার করে নিজের মধ্যে চিন্তায় ভ্রমণ করতে শেখান।

কসমিক সেক্স সিনেমার কাজ ২০১২ সালেই শেষ হয়। পুতুল মাহমুদের প্রযোজনায় সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন অমিতাভ চক্রবর্তী। আর রচনা করেছেন অমিতাভ চক্রবর্তী, লিয়াকত আলী এবং সুরজিৎ সেন। অভিনয়ে ছিলেন ঋ সেন, আয়ুষ্মান মিত্র, মুরারি মুখার্জি, ঋক এবং পাপিয়া ঘোষাল।

যৌনতার মাধ্যমে মোক্ষলাভ সম্ভব। যৌনতা সম্পর্কে ধারণার বিস্তৃতিকরণ, পূর্বরাগ ও মিলনের প্রতিটি স্তর পেরিয়ে দেহজ অনুভূতির শীর্ষে পৌঁছানো এবং রতিক্রিয়ার অন্ধিসন্ধি মন্থন করে সৌন্দর্য, সুখ ও শান্তির অপার সমুদ্রে অবগাহনের জটিল কিন্তু অবধারিত রাস্তাটি চেনায় তন্ত্র সাধনা। তবে একবার এই উপলব্ধিতে পৌঁছাতে পারলে তার সীমানা পার হওয়াই জীবন সাধনার পরম প্রাপ্তি, পরম সাধ্যও বটে।

দেহতত্ত্বের এই গাঢ় আঙ্গিককে কিছুটা তরলায়িত করেই ‘কসমিক সেক্স’ সিনেমার কাহিনী সাজিয়েছেন চিত্রনাট্যকার। আর সিনেমাটির মুখ্য তিন চরিত্র কৃপা, দেবী ও জোনাকির পায়ে পায়ে রূপ পেয়েছে তার প্রতিটি গতি, বাঁক, চোরাস্রোত।

Cosmic_Sex_bahumatrik.comসিনেমার পরিচালক অমিতাভ চক্রবর্তীর কথায়, ‘এই সিনেমাতে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে যৌনতার ব্যবহারের সম্ভাবনা অনুসন্ধান করেছি। যদি কারো যৌন শক্তির ধারা লক্ষ্য করা যায়, তা হলে তা শুরু হবে আকর্ষণ দিয়ে। তারপর পর্যায়ক্রমে আসবে রতিক্রিয়া, যৌন সুখের শিখরে পৌঁছানো, বীর্যপাত, জন্ম, জীবন, সন্তানের বিবাহ, বার্ধক্য ও মৃত্যু।যৌনশক্তির প্রবাহের নিরন্তর প্রদর্শনী চলেছে।’

তার আরো দাবি, ‘আমার ছবিতে দেখানো হয়েছে কিভাবে যৌনতার হাত ধরে যুবক কৃপার স্থূল জীবন থেকে সর্বোচ্চ স্তরে উত্তরণ ঘটে। বাংলার ফকিরদের ওপর তৈরি তথ্যচিত্র ‘বিশার ব্লুজ’ এর আগে পরিচালক হিসেবে অমিতাভ চক্রবর্তীকে বিশ্ব চলচ্চিত্র জগতে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। বস্তুত প্রান্তিক মানুষের পরম্পরায় গচ্ছিত দেহতত্ত্বের ভিত্তিতেই সৃষ্টি হয়েছে ‘কসমিক সেক্স’।

এবার আসা যাক নায়িকা প্রসঙ্গে। ঋতুপর্ণা সেন। সংক্ষেপে ঋ সেন। তিনি বিতর্কিত ও নিষিদ্ধ ‘গান্ডু’ সিনেমার নায়িকা। তবে এবার বোধ হয় সেই রেকর্ডও ভেঙ্গে যাবে। কারণ সিনেমান টেইলরে যে দৃশ্য ইতিমধ্যে দেখানো হচ্ছে তাতেই গান্ডু সিনেমার রেকর্ডের বারোটা বেজে গেছে। তাই বলাই যায় এবার ঋ সেন কলকাতার সিনেমায় আবারো চমক নিয়ে আসবে হয়তো হবে এটিই কলকাতার সবচেয়ে উত্তেজক সিনেমা।

ঋ সেন ২০০৩ সালে মিডিয়াপাড়াতে পা দেন। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে একটু খোলামেলা। এরপর মডেল আর উপস্থাপনায় জনপ্রিয়তা। টিভি সিরিয়াল আর কলকাতার মিউজিক বাংলা টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় সব মিলিয়ে মন্দ নয়। হঠাৎ করেই পেয়ে যান পরিচালক কৌশিক মুখার্জির ‘তেপান্তরের মাঠ’ সিনেমার অফার। কিন্তু সিনেমাটি নিষিদ্ধ হয়।

২০০৯ সালে কৌশিক মুখার্জির আরো দুটি সিনেমা ‘লাভ ইন ইন্ডিয়া’ আর ‘বিষ’ এবং শ্যামল কর্মকারের ‘মেনি স্টোরিস অব লাভ অ্যান্ড হেট’ সিনেমাতে নায়িকা ভূমিকায় অভিনয় করেন। আর খোলামেলা ঋ যে এত খোলামেলা আর অগোছালো হয়ে যাবে তা আগে কেউ বুঝতেই পারেনি যেটা ২০১০ সালে কৌশিক মুখার্জির ‘গান্ডু’ সিনেমা মুক্তির পরই জানা যায়। আর কলকাতা সিনেমায় ইতিহাস হয়ে থাকবে ঋ অভিনীত ‘গান্ডু’ সিনেমা। অবশ্য ভারতীয় সরকার এ সিনেমা নিষিদ্ধ করে। এরপর ঋ-এর ‘কয়েকটি মেয়ের গল্প’।

২০১৩ সালে অনির্বাণ মুখার্জির ‘বয়ানকা পৃথিবী’ আর সবশেষে কৌশিক মুখার্জির ‘তাসের দেশ’। কৌশিক মুখার্জির তাসের দেশ নিষিদ্ধ অনেক কাটাকাটি সেন্সরের পর মুক্তি মেলে। বেশি রগরগে দৃশ্য ছেঁটে ফেলে দেয়া হয়।

মানবকণ্ঠের সৌজন্যে

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer