ঢাকা : ফরিদপুরের সদরপুরে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন রোধে নদী তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন হলে নদের ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে। এতে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি রক্ষার পাশাপাশি বসতবাড়ি-রাস্তাঘাট রক্ষা পাবে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর হতে আড়িয়াল খাঁ নদের তীর সংরক্ষণের এই কাজ শুরু হয়। ২৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে দশটি গ্রুপে বিভক্ত এ কাজের মধ্যে ৫ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ ও ৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার নদীর ড্রেজিং কাজ করা হবে। ২০২১ সালের জুনে এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। ওই এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা চরাঞ্চলের কৃষক হবি খাঁ বলেন, ‘জন্মের পর থেকে আমরা আড়িয়াল খাঁর ভাঙনের শিকার। চারবারের ভাঙনের পর বর্তমানস্থানে বসত গড়েছি। এখন নদীর তীর বাঁধাইয়ের কাজটি ভালোভাবে শেষ হলে পরিবার নিয়ে নিরাপদে বসবাস করতে পারব।’
আরেক কৃষক নুরুল আলম বলেন, ‘গত ৫০ বছর যাবৎ এই আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন দেখেছি। এখন এই কাজ শুরু হওয়ায় আবার নতুন করে বসত গড়ার স্বপ্ন দেখছি।’সরেজমিনে ইউএনবির এ প্রতিনিধি দেখেন, আড়িয়াল খাঁ নদের বলাশিয়া এলাকা থেকে কাজের শুরু হয়েছে। সেখানে নদীর তীরে ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। পাশাপাশি চলছে ব্লক তৈরির কাজ। ড্রেজিং শেষে নদীর তীরে ব্লক প্রতিস্থাপন করে পাড় বাঁধাই করে দেয়া হবে।
ওই কাজের ১ নম্বর প্যাকেজের নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূর এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে কার্যাদেশ পেয়ে ড্রেজিং ও ব্লক তৈরির কাজ শুরু করি। এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ ড্রেজিং সম্পন্ন হয়েছে। ব্লক তৈরি হয়ে গেছে প্রায় ৯০ ভাগ।’এ বিষয়ে ফরিদপুর-৪ আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর সদরপুর ও চরভদ্রাসনে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছিল তার প্রধান অঙ্গীকার। তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রী আনেয়ার হোসেন মঞ্জুকে নিয়ে সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে জনগুরুত্ব বৃহৎ এই প্রকল্পের অনুমোদন পায়।
‘প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন হলে এই এলাকার মানুষের জানমালের নিরাপত্তার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতাও ফিরে আসবে,’ বলেন তিনি।