ঢাকা : বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে “জেন্ডার, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন বিষয়ক সার্টিফিকেট কোর্স, ২০১৬ সমাপনী ও সনদপত্র প্রদান” অনুষ্ঠান হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন।
এতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক তানিয়া হক, আইনজীবী অ্যাড. হিরন্ময় হালদার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ। ৮টি মডিউলে ৩ মাসের এই কোর্সটি ৪২ টি ক্লাশের মাধ্যমে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, মহিলা পরিষদ নিয়মিতভাবে এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে যাচ্ছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়। নারীরা নিজেরা গুছিয়ে যে কোন কাজ করে যারই প্রতিফলন দেখছি আমি এই সংগঠনে।
তিনি বলেন, নারীর অগ্রযাত্রা যেই সংগঠনের লক্ষ সেখানে আমরা সম্পৃক্ত থাকতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীর অনুপাত প্রায় কাছাকাছি। কোন কোন অনুষদে ছাত্র-ছাত্রী প্রায় সমান। এবছর ডিনস অ্যওয়ার্ড পেয়েছেন ১০০ শতাংশ ছাত্রী, জীব বিজ্ঞান অনুষদে ৮০ শতাংশ ছাত্রী। বহুদিন ধরে মেয়েরা পিছিয়ে ছিল। তাই মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরা সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাচ্ছে। একটি সমাজ এগিয়ে যাওয়ার জন্য নারীর ক্ষমতায়ন যে কত গুরূত্বপূর্ণ, তার প্রতিফলন আমরা উন্নত দেশগুলোতে দেখি। মানুষের নীতি নৈতিকতা নিন্মমুখী। কেন স্বাধীন দেশের নাগরিক মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে তাও আমাদের দেখতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ পাঁচ বছর ধরে এই কোর্সটি পরিচালনা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বহুমাত্রিক কাজের ছোট একটি নমুনা এই কাজ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
পাঁচ দশকের কাজের তিনটি ভাগ করলে একেক দশকের কাজে আমরা একেক রকমের অভিজ্ঞতা অর্জণ করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন। একে আরো অধিকতর ফলপ্রসূ করত হলে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। আজ আমরা অস্তিত্বের সংকট, আত্মপরিচয়ের সংকটে ভুগছি। দির্ঘ কয়েক শতকের আন্দোলন করে দেখতে পাচ্ছি নারী আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হয়েছে। নাগরিক হিসেবে নারীকে দুইমুখী দায়িত্ব পালন করতে হয়। ঐতিহাসিক ভূমিকার ভিতর দিয়েই নারীকে এই ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক সীমা মোসলেম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ চার দশকের অধিক সময় ধরে নারীর অধিকার আদায়ের লক্ষে কাজ করছে যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীর মানবাধিকার রক্ষা।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. হিরন্ময় হালদার শিশির, তারা বলেন মহিলা পরিষদের আন্দোলনের ফসল এই বিভাগ। যেখানে মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে নারী-পুরুষ সমতাপূর্ণ একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। নারী আন্দোলন এবং এই বিভাগ একসাথে কাজ করলে আমরা নারী-পুরুষের জন্য পাবো এক সমতাপূর্ণ পৃথিবী।
তারা আরো বলেন, বর্তমানে আমরা এমন স্থানে এসে পড়েছি যেই সমাজে নানা ধরনের জেন্ডার বৈষম্য বিরাজমান। বিরাজমান এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে আর কোথায় কোথায় আমাদের কাজ করতে হবে এই বিষয়গুলো নিয়ে নারী আন্দোলনকে আরো ভাবতে হবে বলে তারা উল্লেখ করেন।
৬ষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের মোকাদ্দেসা কাদের করবী, পুলিশের এসপি ফরিদা ইয়ামিন কয়েকটি কোর্সেল কথা উল্লেখ করে বলেন, এই কোর্সগুলো অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ।