
ফাইল ছবি
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি থাকায় গত তিন দিন ধরে ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌ-রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
শুক্রবার ভোর থেকে এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার যাত্রী পড়েছেন চরম বিপাকে।
এদিন সকাল থেকেই ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে দেখা গেছে, নারী-শিশু, বৃদ্ধসহ কয়েক হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন গন্তব্যে পৌঁছানোর আশায়, কিন্তু লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। অনেক যাত্রী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রুটে ছোট ছোট ট্রলার এবং স্পিডবোটে পারাপার হচ্ছেন। এতে করে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভোর থেকে ইলিশা ফেরি ও লঞ্চঘাটে ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। এ সময় লঞ্চ ও সি-ট্রাক ঘাটে বাঁধা থাকলেও যাত্রী পার করেনি, কিন্তু অবৈধ ট্রলারে করে যাত্রীরা পারাপার হচ্ছেন। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এসব ট্রলারে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।।
এসব ট্রলারের উপরে কোনো ছাউনি নেই। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে এতে করেই দেড়-দুই ঘণ্টার উত্তাল নৌপথ পাড়ি দিচ্ছেন যাত্রীরা।
তবে অবৈধ এসব ট্রলারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ, আমরা ভোলার মানুষ এমনিতেই অবহেলিত। আমাদের কাজকর্ম আছে। আমরা অনেকেই চট্টগ্রামে কোম্পানিতে কাজ করি। আমাদের সময়মতো কাজে যোগদান করতে হয়। এ কারণে আমরা ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাটে এসেছি। সকাল বেলা আকাশ পরিচ্ছন্ন ছিল। কোনো ঝড়-বাতাস ছিল না। লঞ্চ-সি-ট্রাক বন্ধ; অথচ অবৈধ ট্রলার, স্পিডবোট ঠিকই চলছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বৈধ বড় লঞ্চ আটকে রেখেছে, কিন্তু অবৈধ ছোট ট্রলারগুলোকে চলতে দিচ্ছে। চাকরিতে সময়মতো যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না। চাকরি না থাকলে আমাদের সংসার চলবে না। এর দায়ভার কে নেবে?
ভোলা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বুধবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার ৯টা পর্যন্ত ভোলায় ৬৭ দশমিক ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই সময়ে ঘণ্টায় ৩ নটিক্যাল মাইল বেগে দমকা হাওয়া বইছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি থাকায় ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে লঞ্চ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কেউ নিয়ম ভাঙলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অবৈধ ট্রলার চলাচল বন্ধে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানিয়েছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।