
সাতক্ষীরা: সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী অবাধে শিকার করা হচ্ছে। এসব প্রাণী ও প্রাণীর চামড়া নিয়ে বন সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত হাট বসে। এসব প্রাণীর মধ্যে রয়েছে হরিণ, গুঁইসাপ, কুমির, কাঠবেড়ালী ইত্যাদি।
জানা যায়, হরিণের মাংস বিক্রি হয় ৩০০-৪০০ টাকা কেজি দরে। সংঘবদ্ধ এই পেশাদার শিকারিরা একটি হরিণের চামড়া ৩০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকে। কালোবাজারে একটি গুঁইসাপের চামড়ার দাম ৫০০০ থেকে ৭০০০ টাকা। একটি কুমিরের চামড়ার মূল্য ২ লাখ টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকা। একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়ার দাম ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকায় চোরাকারবারি বিক্রি করে থাকে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, বাঘের চর্বি প্রতিকেজি কালোবাজারে ২৫ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। সুন্দরবনে বাঘ হত্যা, বাঘের চামড়া, মাথা, দাঁত, নখ ও চর্বি পাচারের সঙ্গে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পাচার চক্র জড়িত রয়েছে বলে অনেকের অভিমত। এ পর্যন্ত সুন্দরবন এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত বেশিরভাগই সাতক্ষীরা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
শিকারিদের অত্যাচারে বাঘ অনেক সময় তাদের আবাসস্থল ছেড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে চলে আসে। জানা গেছে, ব্যাপকভাবে বাঘ পাচার হয়েছে ১৯৮৮ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে। ১৯৮৮ সালের ২৯ নভেম্বর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারা বন সংলগ্ন বিভিন্ন নদী দিয়ে কমপক্ষে ২৫টি মৃত বাঘ ভেসে যেতে দেখেছিল। কিন্তু ওই সময় বন বিভাগের রিপোর্টে মাত্র ৭টি বাঘ দেখানো হয়েছিল।
বিগত কয়েক বছর ধরে চোরা শিকারিদের হাতে ব্যাপকভাবে বাঘ হত্যার ফলে বর্তমানে সুন্দরবনে ৩০০ থেকে ৩৫০টির বেশি বাঘ হবে না বলে বন বিভাগের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। এক শ্রেণীর বন বিভাগের অসাধু কর্মচারীদের সহাতায় পেশাদার শিকারিরা হরিণ, বাঘ, গুঁইসাপ নিধন করে চলছে।
অভিযুক্ত শিকারিদের বিরুদ্ধে বন এলাকায় বিভিন্ন আদালতে মামলা রয়েছে। হাতেনাতে ধরা পড়ার পরও কেউ কেউ বেকসুর খালাস পেয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম