মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে পানির দরেও কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। ফলে দুপুরের পর কেউ কেউ মাটিতে পুঁতে ফেলেন, আবার কেউ কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন কিংবা এতিমখানায় দান করেছেন। গ্রামগঞ্জের অনেক স্থানেই কুরবানি দেয়ার পর পশুর চামড়ার ক্রেতাদের কাউকেও খুঁজে না পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে চামড়া পুঁতে কিংবা নদীতে ফেলে দিয়েছেন এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। জেলার কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলার একাধিক স্থানে এসব ঘটনা ঘটেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কুরবানির ঈদের দিনে সকালে জামায়াত শেষ করেই পশু কুরবানি শুরু করেন। সীমান্তবর্তী এ উপজেলায় প্রায় দশ হাজারের মতো গরু, মহিষ ও ছাগল কুরবানি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দুপুরের মধ্যেই কুরবানি দেয়া পশুর কাটাছেড়া সকল কাজ শেষ হয়েছে। তবে চামড়া বিক্রি করতে অপেক্ষায় ছিলেন প্রত্যেকে। উপজেলা সদর কিংবা শহরের আশপাশ এলাকায় কেউ কেউ পানির দামে কিছু কিছু চামড়া বিক্রি করতে সক্ষম হন। তবে গ্রামাঞ্চলে কিংবা প্রত্যন্ত এলাকায় চামড়া কিনতে কেউ আসেনি। ফলে বিকালের বাধ্য হয়ে কেউ কেউ চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলেন। আবার কেউ কেউ নদীতে ভাসিয়ে দেন এবং কেউ কেউ এতিমখানায় দান করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরের রঘুনাথপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, চামড়া কেনার জন্য দুপুর পর্যন্ত কোন লোক পাওয়া যায়নি। পরে আমরা কয়েকজনের কুরবানির পশুর চামড়া একত্রিত করে শমশেরনগর চাতলাপুর সড়কে মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দান করেছি। ধূপাটিলা গ্রামের শিক্ষক নূরুল মোত্তাকিন বলেন, ক্রেতা না পেয়ে বিকালে গরুর চামড়া মাটিতে পুতে ফেলি। শমশেরনগরের ব্যবসায়ী শিপন, সমাজ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান ও রাজনগরের কামারচাক ইউনিয়নের বাসিন্দা মাইদুল বলেন, আমাদের এলাকার অনেকেই কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন।
পতনউষারের ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, এলাকায় অনেক চামড়া ফ্রি পাইলেও পরিবহন খরচের জন্য চামড়া আনতে পারিনি। অনেকেই ছড়ায় চামড়া ফেলে দিয়েছেন। কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেদায়েত বলেন, এবছর উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার এর মতো কুরবানি হওয়ার কথা ছিল। এরকমই কুরবানি হয়েছে। তবে কুরবানির চামড়া বিক্রির বিষয়ে আমাদের দেখাশুনার কিছু না থাকলেও এতিমখানা ও মাদ্রাসায়ও চামড়া দেয়া হয়।
বহুমাত্রিক.কম