![টিআর ও কাবিখা প্রকল্প: বরাদ্দ উঠিয়ে নিলেও হয়নি বাস্তবায়ন টিআর ও কাবিখা প্রকল্প: বরাদ্দ উঠিয়ে নিলেও হয়নি বাস্তবায়ন](https://www.bahumatrik.com/media/imgAll/2018September/kendua-2307082319.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-চাল) কর্মসূচির প্রকল্পের সমুদয় কাজ এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। গত ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পগুলোর কাজ কাগুজে সমাপ্ত করে বরাদ্দ উত্তোলন করা হলেও বাস্তবে কতটুকু সমাপ্ত হয়েছে তা বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ ও যাদের নামে প্রকল্প তারাই বলতে পারবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানেনই না যে তাদের প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
কেন্দুয়া পৌরসভায় অবস্থিত পারভিন সিরাজ মহিলা কলেজের মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৮.০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২/৩ বছর পূর্বে তিন লাখ, তিন লাখ করে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল কিন্তু গত অর্থ বছর মাঠে মাটি ভরাটের ব্যাপারে কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ২য় বাস্তবায়নের বরাদ্দের পরিমাণ (টাকায়) ২৯,৭২,৩৩৪/- ( উনত্রিশ লাখ বাহাত্তর হাজার তিন শত চৌত্রিশ) টাকা গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-চাল) কর্মসূচির ২য় কিস্তি বাস্তবায়নের বরাদ্দের পরিমাণ ৪২.০৫ মে. টন ; গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা - গম) কর্মসূচীর ২য় কিস্তি বাস্তবায়নের বরাদ্দের পরিমাণ ৮৪.১০ মে. টন।গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা- নগদ অর্থ) কর্মসূচির ২য় কিস্তি বাস্তবায়নের বরাদ্দের পরিমাণ ৬৩,০৪,৯৯৫/- (তেষট্টি লাখ চার হাজার নয়শত পচানব্বই) টাকা ।
নির্বাচনী এলাকার অধিকাংশ জনগণ জানেন না সাংসদ কত টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কার করার জন্য। কেন্দুয়ার জনগণের প্রত্যাশা ছিল ৩০শে জুন, ২০২৩ এর মধ্যে সকল রক্ষণাবেক্ষন এবং সংস্কার বাবদ বরাদ্দের সুষ্ঠু ব্যবহার হওয়ার। এটা শুধু মাত্র কেন্দুয়া উপজেলাতে সংসদ সদস্য কর্তৃক প্রদত্ত বরাদ্দ।
প্রতিটি ইউনিয়ন এবং পৌরসভাতে রয়েছে পৃথক বরাদ্দ। সাংসদ কর্তৃক প্রদত্ত বরাদ্দের তালিকাটির কয়েকটি বিশেষ প্রকল্প হচ্ছে- (১)কেন্দুয়া পৌরসভায় অবস্থিত পারভিন সিরাজ মহিলা কলেজের মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৮.০ মেট্রিক টন গম; (২)কেন্দুয়া পৌরসভার পশুর হাটের মাটি ভরাট বাবদ ২.০ লক্ষ টাকা; (৩) দিগদাইর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৪)দিগদাইর ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ৩.০ মে. টন চাল; (৫)কেন্দুয়া আঠারবাড়ি রাস্তা হতে হেলিপ্যাডের পশ্চিম দিকে রিয়াজ উদ্দিন সাহেবের বাড়ির রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৬) মজলিশ নূর মিয়ার বাড়ি হতে সুলতান মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৭)কাউরাট মসজিদ হতে ঈদগাঁ মাঠের রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (৮)কুন্ডলী হাবিব মিয়ার বাড়ি হতে জফরপুর একনইসিয়ার খাল পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫.০ মে. টন চাল; (৯) সাহাপাড়া গরুহাট রাস্তা সংস্কার বাবদ ৫০ হাজার টাকা; (১০) কাউরাট ঈদগাহ মাঠে মাটি ভরাট বাবদ ১.০ লক্ষ টাকা।
এই দশটি কাজ ছাড়াও বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার মতো আরেকটি কাজ হচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) সাধারণ ২য় পর্যায় কান্দিউড়া ইউনিয়নের কেন্দুয়া মদন পাকা রাস্তা হতে বৈরাটি রতন মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ৮১,৮৫৯/- (একাশি হাজার আটশত উণপঞ্চাশ) টাকার কাজ। উল্লিখিত ১১টি কাজসহ কেন্দুয়া উপজেলার সরকারি বরাদ্দের সকল প্রকল্প প্রকল্পগুলো সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন হলে কেন্দুয়া উপজেলার প্রভূত উন্নতি সাধিত হবে।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাবেরী জালাল জানান, কোনো নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তা আমাকে জানালে আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কেন্দুয়া উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আজিজুর রহমান জানান, এবার প্রকল্পগুলো অর্থ বছরের শেষ সময়ে এসেছে, তাই গত ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে সরকারি ফান্ডে রাখা হয়েছে। এখন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।