ছবি: বহুমাত্রিক.কম
কুড়িগ্রাম : বোবা, কালা’র প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি শিখামনিকে। অন্য আর ৫টি স্বাভাবিক শিশুর মতোই সে। অনেকের কাছে একটি প্রশ্ন, কিভাবে সে পড়া লেখা শিখে এ পর্যন্ত এসেছে। শিক্ষকরাই বা কিভাবে তাকে ক,খ,গ,ঘ শেখালেন।
এ প্রশ্নের উত্তর যা-ই হোক, সে এবার রৌমারী কেরামতিয়া মাদ্রাসা হলে জেডিসি পরীক্ষা দিচ্ছে। শিখামনি রৌমারী উপজেলার হাসানাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী।
ওই মাদ্রসার সুপার আহমদ উল্ল্যাহ বলেন, শিখা অত্যন্ত মেধাবী। হাতের ইশারায় সব কিছু বুঝে নেয়। বাকিটা বোর্ডে লিখে দিতে হয়। তারপরও শিক্ষকদের আলাদা একটা নজর তার দিকে দিতে হয়। সব শিক্ষকই তার প্রতি আন্তরিক। ফলে এ পর্যন্ত আসতে পেরেছে সে।
এব্যাপারে শিখার হাতে খড়ি বকবান্দা নামাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হেকমত আলী জানান, শিখা একজন বাক প্রতিবন্দি হলেও পড়ারেখায় তার মেধা ছিল প্রখর। তাকে হাতের ইশারা ও ব্লাকবোডে লিখে শিখানো হতো।
শিখার পিতা আব্দুস সালাম জানান, ও যে বাক প্রতিবন্ধি ও কালা এটা মানতে রাজি নয় সে। ছোট থেকেই লেখাপড়ার দিকে প্রচন্ড ঝোক তার। প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম পড়ালেখার ওর ভাগ্যে সম্ভব নয়। কিন্তু সে ধারণা পাল্টে গেছে আমার। এখন ভাবছি যত কষ্টই হোক লেখাপড়া করিয়েই ওকে বড় দেখতে চাই। আব্দুস সালাম একজন কৃষক মানুষ।
শিখারা ৩ ভাই বোন। ভাই দুটি ওর ছোট। জানতে চাইলে ইশারায় এসব বলে সে। মাঝে মাঝে না বুঝলে খাতায় লিখে দেয়। এতে সে বলে, আমি অনেক পড়ালেখা করতে চাই। ভাইদেরও পড়াতে চাই। যেন মানুষ আমাকে প্রতিবন্ধি বলে দমিয়ে দিতে না পারে। আমি ডাক্তার হয়ে মানুষের অনেক সেবা করতে চাই।
কেন্দ্র সচিব মাওলানা মোকসেদ আলী বলেন, অন্য পরীক্ষার্থীদের মতই ও স্বাভাবকি। কিন্তু অন্যদের মতো দুষ্ট নয়। পরীক্ষার সময় এক মনে লিখে যায় সে। কোন অসদুপায়ের চেষ্টাও করে না। এটা আমার কাছে একটা বিস্ময় মনে হয়।
বহুমাত্রিক.কম