
ছবি- সংগৃহীত
চিকিৎসা বিজ্ঞানের দুনিয়ায় নয়া মাইলফলক তৈরি হল। তিন দশকেরও বেশি সময় আগে জমিয়ে রাখা ভ্রূণ থেকে জন্ম নিল শিশু। আমেরিকার ওহায়ো রাজ্যে জন্ম নেওয়া এই শিশু হয়ে উঠল বিশ্বের সবচেয়ে ‘প্রবীণতম শিশু’, যার ভ্রূণ ফ্রোজেন অর্থাৎ হিমায়িত অবস্থায় রাখা ছিল টানা ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে।
গত ২৬ জুলাই জন্ম নিয়েছে এই বিশেষ শিশুটি। নাম রাখা হয়েছে থাডিউস ড্যানিয়েল পিয়ার্স। যাকে কোলে পেয়েছেন লিনজি ও টিম পিয়ার্স দম্পতি। কিন্তু এই শিশুর জন্মের গল্পটা রূপকথার চেয়ে কম কিছু নয়। এত দীর্ঘ সময় হিমায়িত অবস্থায় থাকা ভ্রূণ থেকে শিশু জন্মের অন্য নজির নেই।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯২ সালে। সেবার লিন্ডা আর্চার্ড ও তাঁর স্বামীর আইভিএফ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় মোট চারটি ভ্রূণ। এর মধ্যে একটি ব্যবহার করে ১৯৯৪ সালে জন্ম নেয় তাঁদের কন্যা সন্তান। বাকি ভ্রূণগুলো হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয় ভবিষ্যতের জন্য। সময় পেরিয়ে যায়। দাম্পত্য বিচ্ছেদের পর ওই ভ্রূণগুলোর আইনি অধিকার পান লিন্ডা। সেসময়ই জানতে পারেন, আমেরিকায় যেমন সন্তান দত্তক নেওয়া যায়, তেমনই নেওয়া যায় ভ্রূণও। প্রায় তিন দশক পর, ২০২৩ সালে সেই ভ্রূণই পৌঁছায় নিঃসন্তান দম্পতি লিনজি ও টিম পিয়ার্সের কাছে। আইভিএফ ক্লিনিকের সাহায্যে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয় লিনজির গর্ভে।
মাস কয়েক পরেই জন্ম নেয় থাডিউস- যার ভ্রূণের বয়স জন্মের দিনেই ছিল প্রায় ৩১ বছর! লিন্ডা জানিয়েছেন, নবজাতকের মুখে তাঁর নিজের মেয়ের ছায়া দেখতে পেয়েছেন। একদা যে ভ্রূণ থেকে তাঁর কন্যার জন্ম হয়েছিল, সেই একই উৎস থেকে জন্ম নিয়েছে এই নবজাতক। লিনজি জানিয়েছেন, তিনিও এবং তাঁর নবজাতক পুত্র উভয়েই সুস্থ রয়েছেন। আর এই বিস্ময়কর আইভিএফ সফল করেছে ওহায়োর একটি বিশেষ ক্লিনিক। তার কর্ণধার জন গর্ডন বলেন, “ভ্রূণ সংরক্ষণ করে রাখার পেছনে আমাদের উদ্দেশ্যই ছিল একদিন যদি তারও পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ হয়।”