রাজনীতির সজ্ঞায় যে রাজনীতি বা রাজনৈতিক কার্যকলাপ থাকা উচিত ছিল, সে স্থানে আর রাজনীতি নেই। রাজনীতি চলে গেছে ব্যবসায়ী, কালো টাকার মালিক আর আমলা-কামলাদের হাতে। এখন আর রাজনীতিবিদদের মধ্যে সততা, দেশপ্রেম, জনসেবা বা সরলতা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এক সময় রাজনীতিবিদদের মানুষ সম্মান করতো, শ্রদ্ধা করতো এবং ভালও বাসতো কিন্তু বর্তমানে এদেরকে যেমন ঘৃণা করে, তেমনি অবিশ্বাসও করেন মনে প্রাণে। সাম্প্রতিক কালের রাজনীতিবিদরা যা বলে, করে তার উল্টো।
তারা নির্বাচনের সময় বলে এবং পোষ্টারে লেখেন, সমাজ সেবার সুযোগ দিন। বড়ই দুর্ভাগ্য! ওরা নির্বাচনে জয়লাভ করার পর শুধু নিজ এবং নিজ পরিবারেরই সেবা করে.....। যারা ওয়াদা বরখেলাপ করে, তারাতো মোনাফেক; আর মোনাফেকদের শাস্তি জাহান্নাম। মূলত: বাংলাদেশে দু’ধারার রাজনীতি চলছে। একদল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে হবে, আর অন্য দল কিভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবে তার প্রচেষ্টা করা....। এদের বা উভয় দলের লক্ষ্যই হ’ল, ক্ষমতায় থেকে বা ক্ষমতায় গিয়ে কিভাবে দেশবাসীর অর্থ-সম্পদ চুরি করে লুট-পাট করে দেশে-বিদেশে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা বা ব্যাংক-বীমার মালিক হওয়া।
এরা একবার ক্ষমতার স্বাদ পাওয়ার পর দেশ থেকে টাকা-পয়সা বিদেশে পাচার করে বিলাসবহুল বাড়ী-গাড়ী, শিল্প-কলকারখানা স্থাপন করে যাচ্ছে কিন্তু এদেরকে প্রতিহত করার যেন কেউ নেই। দেশবাসীর প্রশ্ন- এরা এতো টাকার মালিক হচ্ছে কিভাবে? এদের কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে, এদের লক্ষ্যই হল যেভাবেই হোক বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে ধনীর তালিকায় নাম ওঠানো। এদের কাছে ন্যায়-অন্যায়, নীতি বা ধর্ম বলতে যেন কিছুই নেই। এদের সস্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা আত্ তাকাসুরের ১-২ আয়াত প্রযোজ্য। এ আয়াতে বিশ্ব জাহানের মালিক এরশাদ করেছেন, ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে, যতক্ষণ না তোমরা কবরস্থানে পৌঁছে যাও।’
সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে- বিএনপির সাবেক এমপি, মন্ত্রী ও নেতাদের নিয়ে; তাদের স্ত্রী, পুত্র-কন্যাদের নামে বিদেশে শিল্প-কল কারখানাসহ ব্যাংকের মালিক হবার। বিএনপির শীর্ষ নেতা মোর্শেদ খানের পুত্র বিদেশে ব্যাংকের মালিক হয়েছে। কেবল যে মোর্শেদ খানের সুযোগ্যপুত্র ব্যাংকের মালিক হয়েছে, তাইই নয়---। অনেক নেতার পুত্র-কন্যারাই বিদেশের মাটিতে অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছে!! বর্তমান ও সাবেক অনেক এমপি, মন্ত্রী ও আমলা-কামলাদের পুত্র কন্যারা বিদেশে পড়াশুনা করছে। দেশবাসী পুনরায় প্রশ্ন করছে, এতো টাকা তারা পেলো কিভাবে? প্রশ্নকারীদের জবাবে কে কি বলবেন তা আমি জানি না। তাদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলবো, ওইসব ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের অর্থ-সম্পদ চুরি করে এতো অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছে। ওরা মস্তবড় চোর, তাতে সামান্যতমও সন্দেহ নেই। গরীব মানুষরা করলে বলা হয় চোর, আর একটু নামী-দামীরা করলে বলা হয়- দুর্নীতি। অথচ এরা উভয়ই চোর, তাতে সামান্যতমও সন্দেহ নেই।
দৈনিকগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছে, ঋণ জালিয়াতির মামলায় এসএ গ্র“পের চেয়ারম্যান গ্রেফতার। এ ব্যক্তির নাম সাহাবুদ্দিন আলম। তিনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ নিয়েছেন। মাত্র সাহাবুদ্দিনই নয়। এরকম বহু ব্যক্তিরা আছে, যারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নামে-বেনামে ব্যবসার নামে ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে দেশে-বিদেশে বিলাস-বহুল জীবন-যাপন করছে।
অনেক এমপি, মন্ত্রী ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা অতি গর্বের সাথে বলেন, তাদের পুত্র-কন্যারা বিদেশে পড়াশুনা করছে। অনেক পরিবারের সবাই আবার বিভিন্ন দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। তাদের বিলাস-বহুল জীবন-যাত্রার অর্থ আসছে কোত্থেকে? অনেকে আছে তাদের স্ত্রী, পুত্র-কন্যাসহ বিদেশে যুগের পর যুগ বসবাস করছে এবং বিদেশে বসেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দিয়ে আসছে। এরা দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে, অথচ সরকার এদের বিরুদ্ধে টুশব্দ পর্যন্ত করছে না। না বলার কারন হলো, সাবেক এবং চলমান সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় অনেকেই এ অনৈতিক কর্মের সাথে জড়িত এবং এ জন্যই তারা নিরব ছিল এবং আছে। বর্তমান সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের তহবিল চুরি করে এবং ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে আর ফেরৎ দেয়নি বা দিচ্ছে না। বড়ই দুর্ভাগ্য তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা নিচ্ছে না। অথচ কৃষিঋণের জন্য হাজার-হাজার কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, হয়েছে এবং অনেকের কোমরে দড়ি লাগিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বর্তমান সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, এমপি, মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও মেয়রসহ জনপ্রতিনিধিদের বেতন-ভাতা ১২৩% ভাগের বেশি বৃদ্ধি করেছে। বৈশাখী বোনাস, ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী, স্বল্পসুদে বাড়ী, কথা বলার জন্য ৭৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট প্রদান, বাসার কাজের লোকের জন্য ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করেছে। এছাড়াও তাদের অলিখিত সুযোগ সুবিধার কোন অভাব নেই! বড়ই দুর্ভাগ্য তাদের ঘুষ বা দুর্নীতিতো বন্ধ হয়নি, বরং আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বেতন বৃদ্ধির পর অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, বেতন বৃদ্ধি হলে ঘুষ ও দুর্নীতি কমবে। ঘুষ বা দুর্নীতি যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা অর্থমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন। তা হলে প্রশ্ন, এতো বেশী বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করলেন কে? এতো বেশী বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করায় দেশে শ্রেণী-বিভেদ বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।
বাংলাদেশে হাজার হাজার পদ খালি থাকা সত্ত্বেও সে সব পদে নিয়োগ না দিয়ে ১২৩% ভাগ বেতন বৃদ্ধির কি কোন প্রয়োজন ছিল। তারা তো বেতন বৃদ্ধির জন্য একদিন কেউ মানববন্ধন বা সভা-সেমিনারও করেনি। সরকার কার কথায় বা কোন ফর্মুলায় ১২৩% বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করলো তা দেশবাসী চিন্তা করে কূলকিনারা করতে পারেনি এবং পারছেন না। এর জবাব অবশ্যই বর্তমান সরকারকে দিতে হবে। যারা সরকারে আছেন তাদেরকে বলবো- দেশবাসীকে বোকা ভাববেন না। দেশবাসী অনেক কিছুই বোঝে, জানে কিন্তু মুখ খুলে কিছু বলেন না বলার মতো সুযোগ পাচ্ছেন না। যদি জনগণ সুযোগ পেয়ে যান তবে কড়ায়-গন্ডায় জবাব আদায় করে নেবার চেষ্টা করবে। এখনও সময় আছে, ক্ষমতাবানরা আত্মশুদ্ধিও চেষ্টা করুন। একটা কথা মনে রাখবেন- এমপি, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, জনপ্রতিনিধিসহ আমলা-কামলাদের বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন কিন্তু দেশবাসী যারা আপনাদেরকে এতো কিছু দিয়ে আসছেন তাদের প্রতি আপনারা কতটুকু দায়িত্বশীল একথা কি একবারও ভেবে দেখেছেন বা দেখার চেষ্টা করছেন?
মহাজোট সরকারের নির্বাচনী ওয়াদা ছিল- এমপি, মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ জনপ্রতিনিধিদের অর্থ ও সম্পদের হিসেব জনসম্মুখে প্রকাশ করার। সরকারের মেয়াদ ১০ বছরের পার করতে মাত্র কয়েক দিন বাকী থাকলেও অর্থ-সম্পদের কোনও হিসাব দেননি। এ না দেওয়ার পেছনে কি কোন কারণ আছে? দেশবাসী বলাবলি করছে- যদি কোন কারণ না থাকে তাহলে মহাজোট সরকার এমপি, মন্ত্রী, উপদেষ্টা, মেয়রসহ জনপ্রতিনিধিদের অর্থ-সম্পদের হিসেব দেয়া থেকে বিরত আছে কেন?
সম্প্রতি বিভিন্ন দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে, দু’জন ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন আলমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ। ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফুর রহমানকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ট্রান্সকম গ্র“পভুক্ত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল, ভ্যাট ফাকি দিয়ে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার এবং অবৈধ উপায়ে জমি দখল করে রেখেছেন।
আর একজন ব্যবসায়ী ঋণ জালিয়াতির কারণে কারাগারে গেলেন। তিনি হলেন এসএ গ্র“পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহাবুদ্দিন আলম। তাকে রাজধানীর একটি হোটেল থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে রিমান্ড চায়। তিনি তার এসএ গ্র“পের ব্যবসা-বাণিজ্যের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করেন। তার মোট ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৬২ লাখ ৪৫ হাজার ৫০ টাকা। তিনি ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা হতে ৯৪০ কোটি ১০ লাখ ৫১ হাজার, ব্যাংক এশিয়া চট্টগ্রাম সিডিএ এভিনিউ শাখা হতে ৭০৯ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ফাষ্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা হতে ৭০১ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা, পূবালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা হতে ২৯৭ কোটি ১১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা, কৃষি ব্যাংক ষোলশহর শাখা হতে ১৭৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৭ হাজার, অগ্রণী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা হতে ৫৪৮ কোটি ৪৪ লাখ, জনতা ব্যাংক মুজিব রোড কর্পোরেট শাখা হতে ১১৮ কোটি ২২ লাখ ৭১ হাজার, প্রাইম ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখা হতে ৫৫ কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। উত্তোলনকৃত ঋণ পরিশোধ না করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করে। ঋণখেলাপীদের তালিকা প্রকাশ করতে গেলে এ রকম শত শত লেখা লেখতে হবে। মাত্র ঋণ খেলাপীদের উদাহরণের জন্য দু’জনের কথা উল্লেখ করা হ’ল। দেশে কত বড় যে প্রতারণার জাল বিস্তার করে রাখা হয়েছে তা দেশের মানুষ কতটুকুই না অবগত আছেন! হলমার্কের ঋণ কেলেংকারীর কথা কে না জানে। ডেসটিনির প্রতারকদের ব্যাপারে দেশবাসী অবগত থাকলেও তাদের কারণে লাখো লাখো নিরীহ মানুষ প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসতে হয়েছে।
প্রশ্ন হল, দেশের মানুষ যাবে কোথায়? দেশ স্বাধীনতার পর এক শ্রেণীর মানুষ যেভাবে রাষ্ট্রের অর্থ-সম্পদ চুরি করতে শুরু করেছিল- তা দেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বড়ই দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি।’ চোরদের শায়েস্তা করার জন্যই তিনি নতুন এক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্য তাকে এ দেশের কায়েমী স্বার্থবাদীরা দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীদের সহযোগীতায় হত্যা করে বাঙালি জাতির লালিত স্বপ্ন ধূলায় মিশিয়ে দেয়। তাঁর লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। তিনি এক জনসভায় বলেছিলেন- ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক স্বাধীনতা মূল্যহীন।’
যারা বাঙালী জাতির পরম হিতৈষী বন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করলো- তারা কারা এবং এরাই বাঙালী জাতির শত্রু। আজও তারা সমাজে সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। সময় এসেছে বঙ্গবন্ধুর আসল খুনীদের বিচার করা।
এক শ্রেণীর সুবিধাবাদীরা সব সময় সুযোগ খুঁজে বেড়ায় কিভাবে অর্থ বিত্তের মালিক হওয়া যায়। নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন কিছু ব্যক্তিরা জাল বিস্তার করতে চাচ্ছে। এদের মধ্যে যেমন অখ্যাত ব্যক্তিরা আছে, তেমনি খ্যাতিমান ব্যক্তিরাও যে নেই তা নয়। এ দেশেরই নয়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান আইনজীবী আমাদের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, তিনি যাদেরকে নিয়ে জোট করেছেন তা হাস্যকরই নয়, বরং এক ধরনের পাগলামিই বলা চলে। তিনি বার বার জাতির জনকের কথা বলেন, আইনের কথা বলেন, সংবিধানের কথা বলেন, তিনি তার জোট করে একজন দুর্নীতিবাজ এবং সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুক্তি চান? বেগম খালেদা জিয়া ইয়াতিমের অর্থ আত্মসাতের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। তার বিচার অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। যদি তাকে মুক্তি দেয়া হয়, তবে জেলখানার সবাইকেই মুক্তি দিতে হবে। এসব কথা দেশের সাধারণ মানুষ বলাবলি করছে। মানুষ বলছে এবং বলবে। কেউ কি পারবে তাদের মুখ চেপে রাখতে? যারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চান তারা দেশপ্রেমিক এবং ন্যায়বান হতে পারেন না। অবশ্যই খালেদা জিয়ার বিচারের রায় কার্যকর করতে হবে।
সাবেক একজন উপদেষ্টা এবং খ্যাতিমান আইন ব্যবসায়ী ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তিনি কতটুকু সৎ তা তার ভাবা উচিৎ ছিল। তিনি একজন সস্মানিত মহিলাকে অপমানমূলক কথা বলেছেন এবং যে আচরণ করেছেন তা ক্ষমার যোগ্য নয়। তাকে গ্রেফতার করাটা সঠিক হয়েছে বলে দেশবাসী মনে করছেন। তাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো আইন সবার জন্য সমান।
আর একজন জিয়া অনুসারী ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি কথার সুযোগ পেয়ে যা খুশী তাই বলে যাচ্ছিলেন। তিনি একটা বেফাস কথা বলে আইনের কাছে ধরা পড়েছেন এবং ক্ষমা চেয়েছেন। তবে সব কিছু যে ক্ষমা চাইলেই হয় না, তা দেশবাসী প্রমাণ পাচ্ছে। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে।
নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন বিদেশে বসে এ দেশের মানুষের সমালোচনা করে চলেছেন। তিনি মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কে যে সব বলছেন তা তার বলা মোটেই উচিৎ হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন- আজ মাসুদা ভাট্টির পক্ষে অনেকে পত্রিকার মাধ্যমে সমর্থন জানাচ্ছেন কিন্তু তার পক্ষে কেউ দাঁড়াচ্ছে না। তাকে বলবো- আপনি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলে দেশবাসীর বিরাগ-ভাজন হয়েছেন। কিন্তু মাসুদা ভাট্টি ধর্মের বিরুদ্ধে যাননি। তাকে ব্যারিষ্টার মঈনুল অন্যায়ভাবে আক্রমণ করেছে বলেই আজ সমগ্র জাতি তার পক্ষে। তাসলিমা একজন নারী হয়ে একজন নারীর বিপক্ষে দাঁড়ানোটা একটুও ঠিক হয়নি। তার এ আচরণের জন্যই তার পক্ষে কেউ দাঁড়ায়নি এবং ভবিষ্যতেও দাঁড়াবেন না। শেষবারেও বলবো, বাংলার মানুষ সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়াচ্ছে এবং দাঁড়াবে।
তাসলিমাকে বলবো, আপনি একজন নারী হয়ে ওইভাবে একজন নারীকে হেয় করা ঠিক হয়নি। বিপদের দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ান বা দাঁড়াতে চেষ্টা করুন। শেষবারে বলবো, আপনার আচরণ ভাল হয়নি। ভাল হতে চেষ্টা করুন। তবেই মাসুদা ভাট্টির পক্ষে মানুষ দাঁড়িয়েছে, আপনার পক্ষেও দাঁড়াবে.....।
উপসংহারে বলবো- অসৎ রাজনীতিবিদ, অসাধু ব্যবসায়ী, অসৎ আমলা-কামলাদের দিন শেষ হয়ে আসছে। আজ জেগেছে সেই জনতা বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা. . . তাইতো বলছি সাধু সাবধান! সাবধান!! সাবধান!!!
মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন, সাংবাদিক ও কলাম লেখক, ফোন নং- ০১৭১-০৮৮৩৪১৩,
ইমেইল : [email protected]
বহুমাত্রিক.কম