Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ৪ ১৪৩০, মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪

ভারত-চীন সংঘাতের কারণ মোদির উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ!

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৫২, ২০ জুলাই ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ভারত-চীন সংঘাতের কারণ মোদির উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ!

ঢাকা : ভারতে ক্রমেই বাড়ছে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেদিকেই বেশি নজর দিয়েছেন। অবহেলা করেছেন চীনের মতো রাষ্ট্রের প্রতি সঠিক বৈদেশিক নীতি রূপায়ণে। ভুল নীতি গ্রহণ করায় এখন পালটা চাপের মুখে ভারতই। সংবাদ প্রতিদিন’র প্রতিবেদন 

এবার এই ভাষাতেই ভারতকে মৌখিক আক্রমণের পথে হাঁটল চীনা সংবাদমাধ্যম। বৃহস্পতিবার এই ভাষাতেই চীনের সরকারি সংবাদপত্র ভারতের সমালোচনা করল। ধর্মীয় প্রসঙ্গ তুলে চীনের এই আক্রমণে বেশ অবাক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। চীনা সংবাদপত্রে এও দাবি করা হয়েছে যে, নয়াদিল্লির শক্তি বেজিংয়ের চেয়ে বহুগুণ কম। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতিবিদরা সেই সহজ সত্য মেনে নিতে চান না।

সিকিম সীমান্তের কাছে চীনা সেনার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় ভেদাভেদ নিয়ে অশান্তি উসকে নয়াদিল্লিকে নতুন করে বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বেজিং, এমনটাই মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

চীনা সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ থেকেই ভারতে মুসলিমদের উপর হিন্দুরা ‘অত্যাচার’ চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না! বরং তিনি হিন্দুদেরই রক্ষা করে চলেছেন। যদিও বাস্তব বলছে অন্য কথা। ২০১৪-য় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে একের পর কড়া পদক্ষেপ করেছেন মোদি। কালো টাকার বিরুদ্ধে অভিযানই হোক বা সীমান্তের ওপারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক- সবক্ষেত্রেই লড়াকু মনোভাব দেখিয়েছেন মোদি। তাঁর নেতৃত্বেই চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব গ্রহণ করেছে সাউথ ব্লক। যদিও সত্যিটা তুলে ধরতে অপারগ চীনের সরকার পরিচালিত গ্লোবাল টাইমসের দাবি অবশ্য ভিন্ন।

চীনা মিডিয়ার বক্তব্য, ‘মোদির জয় হিন্দুদের মনে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটিয়েছে। হিন্দু নাগরিকদের মনে দেশের প্রতি ভালবাসার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন মোদি। ফলস্বরূপ, ভারতের সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্যর্থ হয়েছে নয়াদিল্লি।

বিশেষত, চিন ও পাকিস্তানের প্রতি কোনও নির্দিষ্ট বৈদেশিক নীতিই গ্রহণ করা হয়নি। বরং ধর্মীয় জাতীয়তাবাদকে অক্ষুন্ন রাখতে চীনকে সীমান্ত ইস্যুতে চটিয়েছে ভারত।’ এখানেই না থেমে ওই সংবাদপত্রে আরও জানিয়েছে, ‘ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ বজায় রাখতে মুসলিমদের উপর অত্যাচার চলছে ভারতে। এখনই এই উগ্র জাতীয়তাবাদী মনোভাবকে না থামানো গেলে পরে মোদি কিছুই করতে পারবেন না।’ ফের একবার ১৯৬২-র পরিস্থিতি তৈরি হবে বলেও ভারতকে চাপে রাখতে চেয়ে ইঙ্গিত দিয়েছে চিন। চীনা মিডিয়ার দাবি, ১৯৬২-র যুদ্ধে হেরেও ভারতীয়দের মানসিকতা পালটায়নি। চিনের বৈপ্লবিক উন্নয়নকে ভারত কখনই ভাল চোখে নেয়নি। বরং যত দ্রুত চীন উন্নতি করছে, ভারত ততই ভয় পাচ্ছে।

বেজিং চায়, সিকিম সীমান্তে ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করুক ভারত। সামরিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, লালফৌজের আগ্রাসী মনোভাবে ক্রমশ সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে এশিয়ার দুই মহাশক্তি চীন ও ভারত। ইতিমধ্যেই তিব্বতে কয়েক লক্ষ টন শক্তিশালী সামরিক সরঞ্জাম মজুত করেছে চীন। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সেনা। সেনা সংখ্যাটা আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ হাজার। জুন মাসের শেষ দিকে বেশ কয়েক দিন ধরে ধীরে ধীরে এই সেনা সমাবেশ করেছে লালফৌজ। এখনও তা চলছে পুরোদমে।

তিব্বতের দুর্গম মালভূমিতে কয়েক লক্ষ টন সামরিক সরঞ্জাম ও বিপুল সেনা মোতায়েনের এই ঘটনা গত কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন। লালফৌজের ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড এই যুদ্ধ প্রস্তুতি চালাচ্ছে। দক্ষিণ তিব্বতে সিকিম, অরুণাচল সীমান্তের কাছে হিমালয় পর্বতের উত্তর পাড়ে এই যুদ্ধ প্রস্তুতি চালাচ্ছে চীন। তবে গোটা ঘটনার দিকে কড়া নজর রেখেছে ভারতীয় সেনা। তিব্বতে চীনের চলতি মহড়া ও যুদ্ধ প্রস্তুতি সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রতিরক্ষা ও বিদেশমন্ত্রককে অবহিত করছে ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসস উইং (র) এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)। 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer