ছবি : বহুমাত্রিক.কম
ঠাকুরগাঁও : ‘কথায় আছে আপনের চেয়ে পর নাকি ভালো’ আর পরের চেয়ে বৃদ্ধাশ্রম। খুব কঠিন হলেও কথাটি সত্য। আর এ সত্যকে মেনেই অনেক বৃদ্ধ মা-বাবা আশ্রয় নেন বৃদ্ধাশ্রমে।
২০১১ সালে এমনি একটি বৃদ্ধাশ্রমের উদ্বোধন হয়েছিলো ঠাকুরগাঁওয়ে। কিন্তু আজও দেখা গেলোনা কোন বৃদ্ধাকে। দিনের পর দিন সংস্কারের অভাবে এটি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। যার ফলে আসছেন না কোন বৃদ্ধা। বর্তমানে নেশার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে বলে অনেকের অভিযোগ।
সারেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে খানিকটা দূরে রোড় এলাকায় অবস্থিত এমন একটি বৃদ্ধাশ্রমটি। সন্তানের কাছে যাদের বেশি কিছু চাওয়ার নেই শেষ বয়সে আদরের সন্তানের পাশে থেকে সুখ-দুঃখ ভাগ করবার ইচ্ছা এতোটুকুই যা চাওয়ার। আর এ নিয়েই প্রতিটি পিতা-মাতা প্রহর গুণতে থাকেন দিবা-রজনী। কিন্তু অনেকেরই সেই সন্তানের কাছে আশ্রয় না হয়ে আশ্রয় হয় আপনজনহীন বৃদ্ধাশ্রমে।
এরই উদ্দেশ্যে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত ভবনে এটি উদ্বোধন করা হয়। এর কয়েক বছর আগেই সমাজসেবা অধিদপ্তর কার্যালয়টি ওই ভবন থেকে স্থানান্তর করা হয়। বৃদ্ধাদের আশ্রয়ের জন্য ভবনটিতে নয়টি কক্ষ রয়েছে। উদ্বোধনের পর থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে আগ্রহীদের আহ্বান জানানো হলেও তাতে সাড়া মেলেনি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে এই বৃদ্ধাশ্রমের ভবনটি তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে ভগ্নদশায় রয়েছে এটি। জরাজীর্ণ ভবনটির দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া এটি অপরিচ্ছন্ন। দেয়ালে ফাটল থাকার কারণেই সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়।
অথচ ওই ভবনেই ২০১১ সালের জুনে বৃদ্ধাশ্রম উদ্বোধন করেন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো বৃদ্ধ এখানে থাকার আগ্রহ দেখাননি। প্রশাসন শুধু কাগজে-কলমে বৃদ্ধাশ্রম হিসেবে ভবনটি ধরে রেখেছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আশ্রমে কেউ আসছেন না। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে বৃদ্ধাশ্রম চালু করায় আশ্রয়ের জন্য কেউ যাচ্ছেন না সেখানে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, ভবনটি বৃদ্ধাশ্রমের জন্য উপযোগী হলে অবশ্যই তা পরিচালনার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশা দেন তিনি।
বহুমাত্রিক.কম